আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের বিশেষ বাহিনী গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের ভেতরে ঢুকে অভিযান চালিয়েছে। এর বাইরেও প্রতিবেশী দেশটির ওপর চাপ বাড়ানোর লক্ষ্যে নতুন নতুন অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে নয়াদিল্লি।
ভারতের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেছেন, বিশেষ সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে পাকিস্তানে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে হত্যা করেছে। নয়াদিল্লির সন্দেহ, এই জঙ্গিরা ভারতের বড় বড় শহরে হামলার পরিকল্পনা করছিল।
কাশ্মীরের হামলায় ভারতের ১৮ জন সেনা প্রাণ হারানোর ঘটনায় পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিদেরই দায়ী করেছে নয়াদিল্লি। এ বিষয়ে নয়াদিল্লির কাছে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দাবি করেছে ইসলামাবাদ। ভারতের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেছেন, এখন পাকিস্তানের নতুন কোনো আক্রমণের পরিকল্পনা সেনাবাহিনীর নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার নয়াদিল্লির বিকাশমান অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করা যায় কি না, তা নিয়ে তর্কবিতর্ক করছে।
ভারতের তুলনায় পাকিস্তানের ভৌগোলিক আকৃতি পাঁচ ভাগের এক ভাগ আর অর্থনীতি সাত গুণ ছোট। ভারতের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা চলমান পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে বলেন, কেবল সীমান্ত পার হয়ে ১২-১৪ জনকে মেরে চলে আসবে—এমন উদ্দেশ্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর নেই। বরং তাদের উদ্দেশ্য পাকিস্তানের আচরণে পরিবর্তন আনা; আর সে জন্য নানামুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। এসব কৌশলের আওতায় জাতীয় সামর্থ্যের পুরোটা ব্যবহার করতে হবে। সামরিক শক্তি প্রয়োগ একটা উপায়মাত্র।
ভারত আরও যেসব বিকল্প কৌশলের কথা বিবেচনায় রেখেছে, সেগুলো হলো পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য নিরোধ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) মতো তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে হয়ে থাকে যেসব বাণিজ্য, সেগুলোর ওপর অবরোধ আরোপ করতে চায় নয়াদিল্লি।
এ ছাড়া পাকিস্তানের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া কয়েকটি নদীতে বাঁধ নির্মাণের চিন্তাভাবনাও করছে নয়াদিল্লি। পাশাপাশি পাকিস্তানে কীভাবে জঙ্গিরা ঘাপটি মেরে কাজ করে এবং সারা বিশ্বের জন্য হুমকি তৈরি করে সেই চিত্র তুলে ধরে ইসলামাবাদের ওপর কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করতে চায় ভারত। একজন কর্মকর্তা বলেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেন পাকিস্তানে ব্যবসা করা থেকে বিরত থাকে, সেই প্রচেষ্টাও চালাবে ভারত। রয়টার্স ও প্রথম আলো
০১ অক্টোবর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি