শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৬, ১০:৪৪:০৬

ভারতে ইসলাম ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক অভিন্ন বিধির উদ্যোগ বিজেপির গোপন এজেন্ডা!

ভারতে ইসলাম ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক অভিন্ন বিধির উদ্যোগ বিজেপির গোপন এজেন্ডা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতে সব নাগরিকের জন্য একটি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বা ইউনিফর্ম সিভিল কোড বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সে দেশের জাতীয় আইন কমিশন একটি জনমত যাচাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

তারা দেশের সব নাগরিকের কাছে জানতে চেয়েছে, মুসলিমদের মধ্যে যে 'তিন তালাকে'র প্রথা কিংবা হিন্দু সমাজের কোনও কোনও অংশে 'মৈত্রী-কারার' বা বহুবিবাহের মতো যে সব পদ্ধতি চালু আছে সেগুলোর ব্যাপারে তাদের মতামত কী।

তবে ভারতের মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড আজ এই প্রক্রিয়া বয়কটের আহ্বান জানিয়ে অভিযোগ করেছে, ইউনিফর্ম সিভিল কোড প্রণয়নের নামে আইন কমিশন আসলে বিজেপি সরকারের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাইছে।

আইন কমিশনের চেয়ারম্যান জাস্টিস বি এস চৌহান তাদের ওয়েবসাইটে চার পাতার একটি প্রশ্নপত্র আপলোড করে লিখেছেন, দেশে 'সামাজিক অন্যায়'গুলো দূর করার জন্য একটি ইউনিফর্ম সিভিল কোড প্রণয়ন করা যায় কি না, সেই লক্ষ্যেই তাদের এই উদ্যোগ।

প্রশ্নপত্রে মুসলিমদের মধ্যে প্রচলিত তিন তালাকের প্রথা পুরোপুরি রদ করা, বহাল রাখা কিংবা তাতে সংশোধনী আনার ব্যাপারে মানুষের রায় কী জানতে চাওয়া হয়েছে।

হিন্দুদের ক্ষেত্রে মেয়েদের পৈতৃক সম্পত্তির উত্তরাধিকার পাওয়া সহজ করতে আইন পরিবর্তন করা উচিত কি না, সে ব্যাপারেও মতামত আহ্বান করা হয়েছে।

খ্রীষ্টানদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ চূড়ান্ত করার আগে দুবছর বাধ্যতামূলকভাবে অপেক্ষা করার যে রীতি আছে, সেটা কতটুকু নারী-বিরোধী সে ব্যাপারেও ভারতের নাগরিকরা তাদের মত জানাতে পারবেন।

ফলে ভারতে প্রায় প্রধান সব ধর্মের বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয় নিয়েই জাতীয় আইন কমিশন মতামত আহ্বান করেছে। যদিও তারা আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শদাতা হিসেবেই কাজ করে, সরাসরি আইন প্রণয়নের কোনও ক্ষমতা তাদের নেই।

কিন্তু ভারতের মুসলিম সমাজের সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগঠন মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এর মধ্যেই এই জনমত যাচাই নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে ।

বোর্ডের সদস্য হজরত মৌলানা ওয়ালি রহমানি দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে এদিন বলেছেন, ভারতীয়দের এই প্রক্রিয়া বয়কট করা উচিত - কারণ বহু ধর্ম, বহু মতের দেশ ভারতে ইউনিফর্ম সিভিল কোড কখনও প্রযোজ্য হতে পারে না।

বিবাহ, বিবাহ-বিচ্ছেদ, সম্পত্তি বা উত্তরাধিকারের মতো বিষয়গুলো বিভিন্ন ধর্মের 'পার্সোনাল আইনে'র মধ্যে পড়ে এবং সেখানে আইন কমিশন নাক গলাতে পারে না বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। -বিবিসি।
১৪ অক্টোবর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে