আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আরোগ্যের জন্য এসেছিলেন হাসপাতালে৷ আর সেখানে আগুনের গ্রাসে প্রাণটাই চলে গেল! কলকাতার আমরি হাসপাতালের বিভীষিকার স্মৃতি উস্কে দিল ভুবনেশ্বর। সোমবার সন্ধ্যায় এক বেসরকারি হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হল ২৪ জনের।
মৃত্যু হয়েছে অগ্নিদগ্ধ হয়ে বা ধোঁয়ায় শ্বাসরোধ হয়ে। মৃতদের বেশিরভাগই ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী৷ মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
হাসপাতালের একটি স্টোর রুমে বৈদ্যুতিক শট-সার্কিটের কারণে আগুন লাগে বলে জানিয়েছে হাসপাতালের কর্মীরা। তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ডায়ালেসিস ইউনিটে৷ দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন দ্রুত আগুন আয়ত্বে আনলেও জমাট ধোঁয়া ও কার্বনে আটকে মারা যান রোগীরা৷ এরই মধ্যে ৪০ জন রোগীকে নিরাপদে সেখান থেকে উদ্ধার করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়৷ বিপর্যয়ের খবর পাওয়া মাত্র রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে যান৷
মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক নিজে পরিস্থিতির তদারকি করেন৷ তদন্তের নির্দেশ দেন৷ তিনি বলেছেন, ওই ঘটনায় কোনও পক্ষের গাফিলতি প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি হবে৷ নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, অত্যন্ত বেদনাদায়ক৷ ঘটনাটি ভাবতে গেলেই মাথার স্নায়ু অবশ হয়ে আসছে৷
এদিন সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গনগরে ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড সাম হসপিটালের দোতলায় ডায়ালিসিস ওয়ার্ডে প্রথম ধোঁয়া দেখা যায়৷ ওই ওয়ার্ডে তখনই ৩০ জনের বেশি রোগী ছিলেন৷ এরপরই আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে হাসপাতালের অন্যান্য অংশে৷ আগুনে ঝলসে ও ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মারা যান ২৪ জন৷ ঘটনায় বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন৷ তাঁদের এই হাসপাতালেরই অন্য বিভাগে চিকিৎসা চলছে৷
প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডার সঙ্গে এই ব্যাপারে কথা বলেছেন৷ আহতদের এইমসে স্থানান্তরিত করে চিকিৎসার ব্যবস্থার জন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন৷ তিনি ওড়িশার বিজেপির মন্ত্রী ডি প্রধানের সঙ্গেও কথা বলে ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন৷
ঘটনাস্থলে দমকলের এক আধিকারিক বলেন, আগুন দ্রুত আয়ত্বে আনতে পেরেছিল দমকলের কর্মীরা৷ কিন্তু কী কারণে আগুন লেগেছে তা এখনই নিশ্চিতভাবে বোঝা যাচেছ না৷ ফরেন্সিক তদন্তের পরই তা বলা যাবে৷ অবশ্য, হাসপাতালের কয়েকজন কর্মী, যাঁরা সেই সময় ঘটনাস্থলে হাজির ছিলেন, তাঁরা দাবি করেছেন, স্টোর রুমে শট-সর্কিটের জন্য আগুন লেগেছে৷
স্থানীয় থানায় দমকলের তরফে করা এফআইআরের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তের কাজ শুরু করেছে৷ তবে রাত পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কেউ জনসমক্ষে আসেননি৷ পুলিশও কারও খোঁজ পায়নি৷ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই চিকিৎসাধীন রোগীদের পরিবারের লোকজন হাসপাতালে ছুটে আসেন৷ খোঁজ চলে নিজেদের লোকের৷ বিপদের আশঙ্কায় বাইরের কাউকে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ ও দমকলের কর্মীরা৷ তাতে কিছুটা বিক্ষোভ চলে। -সংবাদ পতিদিন।
১৮ অক্টোবর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম