আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জাতীয় সঙ্গীত চলার সময় তিনি উঠে দাঁড়াননি! হুইল চেয়ারে কাটে যাঁর জীবন, তাঁর পক্ষে উঠে দাঁড়ানো সম্ভবও নয়! অথচ, এই অভিযোগেই গোয়ার এক মাল্টিপ্লেক্সে হেনস্তার শিকার হলেন লেখক সলিল চতুর্বেদী। স্পাইনাল ইনজুরির জন্য দীর্ঘ দিন যাবৎ যিনি হুইল চেয়ারে আবদ্ধ!
চতুর্বেদী জানিয়েছেন, তিনি ওই মাল্টিপ্লেক্সে গিয়েছিলেন ছবি দেখতে। ছবি শুরু হওয়ার আগে চলছিল জাতীয় সঙ্গীত। এই সময়েই আচমকা এক দম্পতি তিনি কেন উঠে দাঁড়াচ্ছেন না- এই অভিযোগে ঝামেলা শুরু করে। প্রথমে স্বামীটি খুব জোরে আঘাত করে তাঁর সিটের পিছনে। সঙ্গে সঙ্গেই ভেসে আসে স্ত্রীর রাগত চিৎকার- এখনও কেন লোকটা উঠে দাঁড়াচ্ছে না!
আঘাত পেলেও প্রাথমিক ভাবে নিজের রাগ সামলে নেন চতুর্বেদী। জানান, তিনি কেন উঠে দাঁড়াচ্ছেন না, সে কথা ওঁদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। বোঝাতে গেলেও অনেক কথা বলতে হবে। যা এই ছবি শুরু হওয়ার সময় অন্যের বিরক্তি উদ্রেক করতে পারে! কিন্তু ওই দম্পতি কোনও কথাই কানে তোলেননি! ক্রমাগত তাঁরা দুর্ব্যবহার করেই যান!
ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি চতুর্বেদী। তবে তিনি যে অত্যন্ত মর্মাহত, তা তাঁর বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার! ‘’আমার বাবা এয়ার ফোর্সে কাজ করতেন। জাতীয় সঙ্গীতকে কী ভাবে সম্মান জানাতে হয়, তা আমার নতুন করে কারও কাছ থেকে শেখার নেই’’, জানিয়েছেন তিনি!
পাশাপাশি নিজের আতঙ্কের কথাও সংবাদমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেছেন লেখক। ‘’এর পর থেকে আমার ছবি দেখতে যাওয়ার কথা ভাবলেই আতঙ্ক হচ্ছে। কে জানে, কী অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করে খাকবে আমার জন্য! আমার অসহায়তার দিকটা তো কেউ বুঝবে না, উল্টে স্পাইনাল কর্ডের ব্যথা আরও বাড়বে’’, বলছেন চতুর্বেদী।
সলিল চতুর্বেদী কিন্তু আম-আদমি নন। ছোটপর্দার ধারাবাহিক ‘গলি গলি সিম সিম’-এর সূত্রে তিনি দেশের এক পরিচিত নাম। এছাড়াও অন্ধদের জন্য প্রথম কোঙ্কনি অডিও-বই প্রকাশ করে তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন খবরের শিরোনামে। এহেন মানুষ যখন হেনস্তার শিকার হন, তখন স্বাভাবিক ভাবেই চমকে উঠতে হয়! সেলিব্রিটি হওয়ার পরেও তিনি যখন দুর্ব্যবহারের শিকার, তখন আম-আদমির নিরাপত্তা কোথায়? এই প্রশ্নটাই এখন শোরগোল ফেলেছে ভারতে! -সংবাদ প্রতিদিন।
২১ অক্টোবর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম