আন্তর্জাতিক ডেস্ক: শরণার্থীদের ঢল যেন এখনো থামেনি! গত দু'দিনে, লিবিয়া থেকে আসা প্রায় ১০০ জনেরও বেশি শরণার্থীর ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয়েছে৷ মঙ্গলবার লিবিয়ার রেড ক্রেসেন্ট-কে উদ্ধৃত করে এই খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)৷
একটি বিজ্ঞপ্তিতে ওই সংস্থা জানিয়েছে, লিবিয়ার দুটি সমুদ্রতট, ত্রিপোলি ও সাব্রাতায় যথাক্রমে ৮৫ ও দশটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ তবে লিবিয়ার সমুদ্র উপকুল রক্ষীবাহিনী যাত্রিবোঝাই দুটি ডিঙি থেকে ২১২ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছে৷ এদের মধ্যে অনেকেই সেনেগাল ও সুদানের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে৷ প্রায় ১৮০০ কিলোমিটার তটরেখা থাকায় লিবিয়া, আফ্রিকার বহু দেশের মানুষের অভিবাসনের প্রথম ধাপ৷ বেশির ভাগেরই গন্তব্য হয় ইতালির লাম্পেদুসা দ্বীপ, লিবিয়া থেকে যার দুরত্ব মাত্র ৩০০ কিলোমিটার৷
২০১১ সালে লিবিয়ার সর্বময় নেতা মুয়াম্মার গদ্দাফির অপসারণ ও মৃত্যুর পর দেশের অস্থিরতারই সুযোগ নিচ্ছে মানবপাচারকারীরা৷ মোটা টাকা নিয়ে তারা সাধারণ মানুষকে নতুন জীবনের হাতছানি দেয়৷ এই লোভে পড়েই আনেকে প্রাণ হারান। শুধু চলতি বছরেই, সাগর পেরিয়ে ইউরোপে এসেছেন প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ মানুষ৷ এর পাশাপাশি মৃত্যুও হয়েছে তিন হাজার মানুষের৷
এরই পাশাপাশি, ভারতে শরণার্থী বিষয়ক শাখার (ইউএনএইচসিআর) একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে সারা বিশ্বে শরণার্থীদের সংখ্যা প্রায় ছ'কোটি৷ অথচ এক দশক আগে, আন্তোনিও গুটেরেজ যখন এই সংস্থার কর্ণধার হিসাবে দায়িত্ব নেন, এই সংখা ছিল দু'কোটির কাছাকাছি৷ গত সোমবার, তার বিদায়ী ভাষণে গুটেরেজ, শরণার্থীদের রক্ষা করার জন্য ১৯৫১ সালের কনভেনশন মেনে চলার পাশাপাশি মুসলিম ও পশ্চিম দুনিয়ার মধ্যে মত বিনিময়ের উপর জোর দেন৷
দেশ পিছু তথ্য অনুযায়ী, ইরাক ও সিরিয়ায় গৃহহীন হয়েছেন দেড় কোটি মানুষ৷ দক্ষিণ সুদান ছেড়ে এসেছেন ৫ লক্ষ৷ লিবিয়ায় এই সংখ্যাটি ৩ লক্ষ৷ বুরুন্ডি ও ইয়েমেন, দু'দেশেই এই সংখ্যাটি লক্ষাধিক৷ এর ভিত্তিতেই গুটেরেজ বলেন যে হেতু গৃহহীনদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই মুসলিম, পশ্চিমি দুনিয়ার উচিত আরও উদার ও পরধর্মসহিষ্ণু হওয়া৷
সিরিয়া সম্পর্কে গুটেরেজের মত হল, সিরিয়ায় শান্তি ফিরে সম্ভাবনা এখন খুবই ক্ষীণ৷ তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জোগানেও টান পড়েছে৷ ভালোভাবে বাঁচার পরিবেশও নেই৷ তাই বয়স নির্বিশেষে অজানা ভবিষ্যতের পথে পা বাড়িয়েছেন হাজার হাজার মানুষ৷ এখনও পর্যন্ত তাদের ভবিষ্যত্ নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি ইউরোপের দেশগুলি৷
০৭ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/