শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৬, ১১:৫৭:০৮

কাশ্মীরে হরতালে সমস্ত স্কুল বন্ধ, ছাড় শুধু হুরিয়ত নেতা গিলানির নাতনির পরীক্ষায়

কাশ্মীরে হরতালে সমস্ত স্কুল বন্ধ, ছাড় শুধু হুরিয়ত নেতা গিলানির নাতনির পরীক্ষায়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর হুরিয়তের ডাকা বনধে কাশ্মীরে স্কুল বন্ধ। কিন্তু এরইমধ্যে রাজধানী শ্রীনগরের দিল্লি পাবলিক স্কুলের ৫৭৩ জন পড়ুয়া ইন্টারন্যাল পরীক্ষায় বসেছে। জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের সহযোগিতায় শহরের হাই সিকিউরিটি জোনে একটি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এই পরীক্ষা হয়েছে।

গত ১ থেকে ৫ অক্টোবর এই পরীক্ষায় ডিপিএসের নবম ও দশম শ্রেণীর যে পড়ুয়ারা বসেছিল তাদের মধ্যে রয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা তথা হুরিয়ত চেয়ারম্যান সৈয়দ আলি শাহ গিলানির নাতনি। গিলানির বড় ছেলে ড. নয়িম জাফর গিলানির মেয়ে ডিপিএসের দশম শ্রেণীর ছাত্রী।

বুরহানের মৃত্যুর পর অশান্তির জেরে কাশ্মীর উপত্যকার সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ১১১ দিন ধরে পড়াশোনা বন্ধ। স্কুলকেও তাদের বনধের আওতা থেকে বাদ দিতে নারায় হুরিয়ত। এছাড়াও গত দুই মাস ধরে কার্ফুও জারি রয়েছে। এরইমধ্যে বনধ ভাঙতে এবং স্কুলে পড়ুয়াদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ হিসেবে সরকার ঘোষণা করেছিল যে, স্কুলগুলির বার্ষিক পরীক্ষা নির্ধারিত সময়েই নেওয়া হবে। যদিও অভিভাবক ও পড়ুয়ারা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এবং উপত্যকার বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষা স্থগিত রাখার দাবি জানায়।

এরইমধ্যে গত তিন সপ্তাহে কাশ্মীরের প্রায় ১৯ টি স্কুল পুড়িয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। হুরিয়ত অবশ্য এই ঘটনার নিন্দা করেছে।

শ্রীনগরের সবচেয়ে বড় বেসরকারি স্কুল ডিপিএস বিক্ষোভের কারণে জুলাইয়ে টার্ম পরীক্ষা নিতে পারেনি। কিন্তু ইন্টারন্যাল পরীক্ষা হয়েছে স্কুলে।

গিলানির ছেলে নইম পেশায় চিকিত্সক। তিনি তাঁর বাবার তেহরিক-ই-হুরিয়ত বা হুরিয়ত কনফারেন্সের সদস্য। শ্রীনগরেই পরিবার নিয়ে আলাদা থাকেন নইম।অশান্তির কারণে উপত্যকার বাকি পড়ুয়াদের পড়াশোনা বন্ধ রাখলেও গিলানির নাতনি তথা নইমের মেয়ের পরীক্ষা বন্ধ হয়নি। তাঁর মেয়ে যে পরীক্ষায় বসেছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন নইম। এক্ষেত্রে তাঁর সাফাই, কে বলেছে যে, আমরা পড়ুয়াদের পরীক্ষায় বসা বা স্কুলে যাওয়ার বিরুদ্ধে? এক্ষেত্রে আমরা কখনই কোনও বিরোধিতা করিনি।

মেয়ের পরীক্ষায় বসার ব্যাপারে নইম বলেছেন, স্কুল পরীক্ষা নিতে চাইলে আমার মেয়েরও পরীক্ষায় বসা বাধ্যতামূলক। এই পরীক্ষা না দিতে পারলে ও আগামী মার্চে ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে পারবে না।

নইম জানিয়েছেন, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দেওয়া ‘ছাড়ের সময়ে’ স্কুল কর্তৃপক্ষে প্রথমে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে তা পরীক্ষা ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

তবে শুধু ডিপিএস-ই নয়, উপত্যকার আরও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ ধরনের পরীক্ষা নিয়েছে। সম্প্রতি সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রদের ইন্টারন্যাল টেস্টের ব্যবস্থা করেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানিয়েছেন, পরীক্ষা না হলে পড়ুয়াদের একটা বছর নষ্ট হয়ে যেত। ঝুঁকি এড়াচে কয়েকজন ছাত্রকে অ্যাম্বুলেন্সে করে পরীক্ষা হলে নিয়ে আসা হয়েছিল।
পড়ুয়াদের অনুরোধ মেনে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড টেকনোলজিও ম্যানেজমেন্টের চূড়ান্ত বর্ষের পড়ুয়াদের পরীক্ষা নিয়েছে।-এবিপি আনন্দ।
২৮ অক্টোবর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে