আন্তর্জাতিক ডেস্ক : খারত অধিকৃত কাশ্মীর সীমান্তে দেশটির সেনাবাহিনীর এক সদস্যকে হত্যার পর শিরশ্ছেদ ও শরীর বিকৃত করা হয়েছে। এর বিপরীতে প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে জম্মু-কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলায় সীমান্তের মাছিল সেক্টরে এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। সীমান্ত পার হয়ে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে প্রবেশ করে ওই সৈনিককে হত্যা করে পালানোর সময় এক ‘জঙ্গি’ নিহত হয় বলে দাবি করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ‘জঙ্গিরা’ ওই ভারতীয় সৈনিকের শরীর বিকৃত করে এবং তার শিরশ্ছেদ করেছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, ‘আজ সন্ধ্যায় নিয়ন্ত্রণরেখার নিকটবর্তী এলাকায় এক সেনা সদস্য নিহত হন। বন্দুকযুদ্ধে এক জঙ্গিও নিহত হয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গুলির কারণে অন্য জঙ্গিরা পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।’ পালিয়ে যাওয়ার আগে ‘জঙ্গিরা’ ওই নিহত সেনা সদস্যের শিরশ্ছেদ ও শরীর বিকৃত করে বলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি।
ওই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘এই ঘটনায় পাকিস্তানের আনুষ্ঠানি ও অনানুষ্ঠানিক সংস্থাগুলো কতোটা বর্বর, তা প্রকাশ পেয়েছে।’
ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ ঘটনার সমুচিত জবাব দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
বর্ডার গার্ড ফোর্স (বিএসএফ)-এর পক্ষ থেকে ১৫ পাকিস্তানি সেনা সদস্য নিহতের দাবি করার পরই এই হামলা চালানো হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে সাত পাকিস্তানি সেনা নিহতের দাবি করেছিল বিএসএফ। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এসব দাবি নাকচ করা হয়েছে।
সম্প্রতি ভারতের উরি সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলায় ১৯ সেনা সদস্য হত্যা এবং ২৯ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সেনাবাহিনীর চালানো ‘সার্জিক্যাল স্টাইকস’-এর দাবির পর থেকে দেশ দুটি কার্যত যুদ্ধাবস্থায় রয়েছে।
এদিকে, শুক্রবার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের রণবীর সিং পুরা (আরএস পুরা) সেক্টরে কর্তব্যরত অবস্থায় গুরুতর আহত হন বিএসএফ জওয়ান কোলি নিতিন সুভাষ। স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২৮ বছর বয়সী ওই জওয়ানের বাড়ি মহারাষ্ট্রের সাংলি এলাকায়। সুভাষ বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক বলে বিএসএফ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এ নিয়ে আট দিনে চার বিএসএফ সদস্য নিহত হলেন।
এর আগে বুধবার আরএস পুরা সেক্টরের আবদুল্লিয়ান এলাকায় আহত বিএসএফ হেড কনস্টেবল জিতেন্দর কুমার চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে মারা যান।
এদিকে, শনিবার সকাল ৬টার দিকে পাকিস্তানি সেনারা ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের বেসামরিক জনবসতি এবং বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)-এর অবস্থান লক্ষ্য করে মর্টার হামলা চালায়। এর বিপরীতে ভারতের পক্ষ থেকেও গুলি ও মর্টার দিয়ে জবাব দেওয়া হয় বলে পুলিশের দাবি।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, রণবীর সিং পুরা (আরএস পুরা) এবং হীরানগর সেক্টরে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত গোলাগুলি চলছিল। -এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু।
২৯ অক্টোবর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম