আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জঙ্গিদের শক্তঘাঁটি মসুল শহরে ইরাকি সেনার পাতা ফাঁদে পা দিলো ইসলামিক স্টেট (আইএস) প্রধান আবু বকর আল বাগদাদি। তাকে এখন ঘিরে ফেলেছে ইরাকি সেনা। গত ৮–৯ মাস ধরে ইরাকে আইএস জঙ্গিদের শেষ ঘাঁটি মসুল দখলের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে ইরাকি সেনাবাহিনী। এই গোটা সময়টা বাগদাদি আত্মগোপন করে ছিল।
কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না তার। কিন্তু গুপ্তচরদের খবর ছিল, মসুলেই আছে বাগদাদি। সেখানেই গোপন ডেরায় বসে রণকৌশল ঠিক করে দিচ্ছে। কাজেই মসুলে চূড়ান্ত হামলার পাশাপাশি বাগদাদিরও খোঁজ চলছিল। হঠাৎই সাফল্য এল বুধবার।
জানা গেল, সেনাবাহিনীর কৌশলী চেষ্টায় গোপন ঘাঁটি থেকে বেরিয়ে এসেছে বাগদাদি। এবং বেরিয়েই বেকায়দায়। চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে ইরাকি বাহিনী। এই সুযোগে তাকে মেরে ফেললে গভীর সঙ্কটে পড়বে আইএস জঙ্গিরা। চলতি সঙ্ঘর্ষের মধ্যেই তাদের নতুন একজন ‘খলিফা’ খুঁজে নিতে হবে। নয়ত নেতৃত্বের সঙ্কটে আরও দিশেহারা হয়ে পড়বে কোণঠাসা আই এস জঙ্গি গোষ্ঠী।
গুজব শোনা যাচ্ছে, বাগদাদি নাকি এর মধ্যেই ঘায়েল। কুর্দি প্রেসিডেন্ট মাসুদ বারজানির সেনাপ্রধান ফুয়াদ হুসেইন এদিন জানিয়েছেন, তার কাছে পাকা খবর আছে যে বাগদাদি হয় মারাত্মকভাবে জখম। হুসেইনের সেনা চরেরা বাগদাদির গতিবিধির ওপর লক্ষ্য রাখত।
তাদের বক্তব্য, বাগদাদি নিজে ময়দানে না নেমে, আড়াল থেকে অন্য আই এস কমান্ডারদের সঙ্গে যোগাযোগের ভরসায় দল চালাত। কিন্তু ২০১৪ সালে প্রাথমিক সাফল্যের পর একে একে সেই কমান্ডাররা যুদ্ধে মারা পড়েছে বা লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে পালিয়েছে। ফলে বাগদাদির নেতৃত্বের রাশ এমনিতেই আলগা হয়ে গিয়েছিল।
দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট সূত্রে খবর, মসুল যুদ্ধে এত বড় সাফল্য এর আগে সরকারি বাহিনী পায়নি৷ কুর্দিশ প্রেসিডেন্ট মাসুদ বারজানির চিফ অফ স্টাফ হুসেইন জানিয়েছেন, “আমাদের কাছে খবর রয়েছে, বাগদাদি শহরের ভিতর আটকে রয়েছে৷ তাকে নিকেশ করতে পারলেই গোটা আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীর কোমর ভেঙে দেওয়া সম্ভব৷” কিন্তু ইরাকি সেনার কাছে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষকে নিরাপদে রেখে জঙ্গিদের নিকেশ করা৷ কারণ, জঙ্গিরা হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে৷ মসুল যুদ্ধে প্রচুর সাধারণ মানুষ মারা পড়ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷
০২ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি