আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মায়ের ডাকে সাড়া দিলো সন্তান। ধরা দিল গত মে মাস থেকে নিখোঁজ থাকা ছেলে। উত্তর কাশ্মীরের তুজ্জর এলাকার ২৬ বছর বয়সি উমক খালিক মীর ওরফে ‘সামির’ নাম লিখিয়েছিল পাকিস্তানের মদতপুষ্ট লস্কর-ই-তৈবায়। গতকাল ভারতীয় সেনাবাহিনীর আবেদনে মা উমককে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিলে সে অগ্রাহ্য করতে পারেনি। অস্ত্রসহ ধরা দেয় নিরাপত্তাবাহিনীর কাছে।
উত্তর কাশ্মীরের সোপোরের প্রত্যন্ত গ্রামের একটি বাড়িতে এক অস্ত্রধারী গা ঢাকা দিয়ে আছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে নিরাপত্তা সংস্থাগুলির সাহায্য নিয়ে গতকাল গভীর রাতে এলাকাটি ঘিরে ফেলে ভারতীয় সেনাবাহিনী। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক সেনা অফিসার বলেছেন, আত্মগোপনকারী সন্ত্রাসবাদীর নাম উমক খালিক মীর ওরফে ‘সামির’, এটা তারা জানতে পারেন। কিন্তু তাকে বারবার বেরিয়ে আসতে বলা হলেও কাজ না হওয়ায় ঠিক হয়, মাত্র ৫ কিমি দূরেই ওর বাড়ি, তাহলে ওর বাবা-মাকে আবেদন করা হবে, যদি তারা ছেলেকে ফিরে আসতে বলেন এবং তাতে কাজ হয়।
সামিরের মা সেনাবাহিনীর অনুরোধ শুনে রাজি হন ছেলেকে ধরা দেওয়ার নির্দেশ দিতে। যদিও তাকে সেনাবাহিনী আশ্বস্ত করে, উমক ধরা দেওয়ার পর তার গায়ে একটি আঁচড়ও পড়বে না, তার প্রতি নমনীয়তা দেখানো হবে। ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। ছেলেকে বোঝাতে তাকে ওই বাড়ির ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়। সেনা অফিসারটি বলেছেন, ভিতরে কী হচ্ছে, টানটান উত্তেজনা, অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে হয় আমাদের। কারণ এতে ঝুঁকি ছিল যথেষ্ট। ওই মহিলা তো বটেই, তাকে রক্ষা করতে মানবঢাল হিসাবে পাঠানো আমাদের ছেলেদেরও জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা ছিল।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য আশঙ্কা সত্যি হয়নি। অনেক বোঝানোর পর সামির মায়ের কথা মেনে বেরিয়ে আসে। একে-৪৭ রাইফেল, তিনটি ম্যাগাজিন, তিনটি গ্রেনেড, একটি রেডিও সেট সহ আত্মসমর্পণ করে নিরাপত্তাবাহিনীর কাছে। তাকে নিয়ম অনুসারে গ্রেফতার করে স্থানীয় পুলিশ।
ওই সেনা অফিসার বলেন, একটা মানুষের জীবন বাঁচাতে সর্বাত্মক চেষ্টা থাকে আমাদের। এটা তারই নমুনা। আমি খুশি যে, ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলাম। যে ছেলের মগজ ধোলাই করে রাজ্যে নিরীহ মানুষ মারতে পাঠানো হোত, তাকে ফিরে আসতে হল মায়ের ডাকে। এটা সম্ভব হল স্নেহ ও ভালবাসার শাসনে। জয় হল মাতৃত্বের। এবিপি
০৪ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি