আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনের পর দেশটির প্রায় দশটি শহরে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী আজ রাস্তায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
নিউইয়র্কে ট্রাম্প টাওয়ারের বাইরে জড়ো হওয়া কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীর মধ্যে পুলিশ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
লস এঞ্জেলেসে বিক্ষোভকারীরা 'ট্রাম্পকে দেশছাড়া করো'', 'বর্ণবিদ্বেষসহ বিভিন্ন বিদ্বেষের বিরুদ্ধে সোচ্চার হও' এ ধরনের ব্যানার নিয়ে প্রতিবাদ করেছে। প্রধান সড়ক বন্ধ করে মিঃ ট্রাম্পের কুশপুত্তলিকাও পোড়ানো হয়েছে।
আমেরিকার বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার বিক্ষোভকারীর রাস্তায়, অনেক স্থানে আমেরিকার পতাকায় আগুন দিয়ে এবং 'ট্রাম্প আমার প্রেসিডেন্ট নন' এই শ্লোগান এবং ব্যানার দেখিয়ে যেভাবে নির্বাচনের ফলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে মানুষ তা নজিরবিহীন বলে বর্ণনা করছেন সংবাদদাতারা।
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আমেরিকা গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
পরাজিত প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনও সমর্থকদের ফলাফল মেনে নেয়ার এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানানোর পরেও মানুষ কেন রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে নেমেছেন?
টেনেসি অঙ্গরাজ্যের অস্টিন পি স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডঃ তাজ হাশমি বলেছেন আমেরিকানরা যে দ্বিধাবিভক্ত হয়েছে এটারই একটা বহি:প্রকাশ এই বিক্ষোভ।
"এই বিক্ষোভে প্রতিফলিত হচ্ছে সমাজ দুভাবে বিভক্ত। একটি হলো 'এলিট' বা শহুরে সমাজ, অপরটি হলো 'নন-এলিট'সমাজ'-বলছেন মি: হাশমি।
নির্বাচনের ফলাফল না মেনে এভাবে বিক্ষোভ করাটা ঠিক হচ্ছে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
"আসলে এই বিক্ষোভ যারা করছেন তারা একধরনের ভীতি থেকে করছেন। তরুণদের মধ্যে এই ভয়টা রয়েছে।আফ্রিকান-আমেরিকান, মুসলিম, ল্যাটিনো-তারা ভয় পাচ্ছেন আসলে আমাদের এখন কী হবে?"- বলেছেন ডঃ তাজ হাশমি।
তবে এ বিক্ষোভ বেশিদিন থাকবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এদিকে অকল্যান্ড, ক্যালিফোর্নিয়ায় বিক্ষোভকারীরা দোকানে ভাঙচুর করেছে। এসব স্থানে রায়ট পুলিশ ডাকা হয়েছে এবং তারা টিয়ার গ্যাস ছুঁড়েছে।
পোর্টল্যান্ড, ওরেগনের মতো কয়েকটি শহরে বিক্ষোভকারীরা আমেরিকার পতাকা পুড়িয়েছে।
এ সময় তারা একটি আন্তঃরাজ্য মহাসড়কও অবরোধ করে রাখে।
লস অ্যাঞ্জেলসে ট্রাম্প বিরোধী সমাবেশের কারণে একটি প্রধান সড়কও বন্ধ হয়ে যায়।
শিকাগোয় ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে সমাবেশ করেছে বিক্ষোভকারীরা। তারা শ্লোগান দেন, "নো ট্রাম্প, নো কেকেকে, নো ফ্যাসিস্ট ইউএসএ"।
ফিলাডেলফিয়া, বোস্টন, সিয়াটল আর সানফ্যান্সিসকোতে বিক্ষোভ হয়েছে।
বুধবার ফলাফল নিশ্চিত হওয়ার কিছু পরেই ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে আর অকল্যান্ড শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে শ্লোগান দেন, 'আমার প্রেসিডেন্ট নন"।
পশ্চিম উপকূলের আরো কয়েকটি শহর, সিয়াটল আর শিকাগোতে ছোট আকারের বিক্ষোভ হয়েছে।
এসব বিক্ষোভে অংশ নেয়াদের বেশিরভাগই ছিলেন শিক্ষার্থী আর তরুণ ভোটাররা। বিবিসি বাংলা
১০ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি