আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২০১৫ সালে শান্তিতে নোবেল পেয়েছে তিউনিশিয়ার নাগরিক সমাজের চারটি সংগঠনের জোট `ন্যাশনাল ডায়ালগ কোয়ার্টেট`। আরব বসন্তের সময়ে গণতন্ত্র বিষয়ে দেশটিতে উত্তেজনাময় পরিস্থিতিতে সফলভাবে মধ্যস্ততার জন্য সংগঠনটিকে এই পুরস্কার দেয় নোবেল কমিটি। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় নরওয়ের অসলোতে দ্য নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি জোটভূক্ত সংগঠনগুলোর নাম ঘোষণা করেছে।
২০১১ সালে জেসমিন বিপ্লব নামে সরকাবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে তিউনিশিয়া। এ সময় দেশটিতে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজের জোট ন্যাশনাল ডায়ালগ কোয়ার্টেট ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। দেশটিতে গণতন্ত্র চরম সংকটের মুখে পড়লে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এ জোট গঠন করেন। জেসমিন বিপ্লব এক সময় গৃহযুদ্ধের রূপ নিতে থাকে তখন তিউনিশিয়ায় সাধারণ মানুষ ও ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আলোচনা করে এ জোটের নেতারা শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করেন। তাদের এ কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ এ বছর এই সংগঠনটিকে বিশ্বের সর্বোচ্চ এ সম্মাননা দেওয়া হলো।
আজ শুক্রবার স্থানীয় সকাল ১১টায় সুইডেনের নোবেল অ্যাসেম্বলি এই পুরস্কার ঘোষণা করে। ১২ অক্টোবর সোমবার অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।
রীতি অনুযায়ী আগামী ১০ ডিসেম্বর স্টকহোমে আনুষ্ঠানিকভাবে তিউনিশিয়ার নাগরিক সমাজের চারটি সংগঠনের জোট `ন্যাশনাল ডায়ালগ কোয়ার্টেট`-এর নেতাদের হাতে ৮০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার (৯ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার) ও একটি সনদ প্রদান করা হবে।
ন্যাশনাল ডায়ালগ কোয়ার্টেট জোটভূক্ত অন্য সংগঠনগুলো হলো : দ্য তিউনিশিয়ান জেনারেল লেবার ইউনিয়ন (ইউজিটিটি), দ্য তিউনিশিয়ান কনফেডারেশন অব ইন্ডাষ্ট্রি (ইউটিআইসিএ), দ্য তিউনিশিয়ান হিউম্যান রাইটস লিগ (এলটিডিএস) ও দ্য তিউনিশিয়ান অর্ডার অব লয়্যারস। তবে পৃথকভাবে এসব সংগঠনকে নয় পুরো জোটকে চলতি বছরের নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হবে।
বিশ্বের সর্বোচ্চ এ সম্মাননার জন্য এ বছর ২৭৩টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে বিভিন্ন দেশের ২০৫ জন ব্যক্তি ও ৬৮ টি সংগঠন এ পুরস্কারের জন্য আবেদন করে। তবে এ বছর জার্মানির চ্যান্সেলার আঙ্গেলা মের্কেল, পোপ ফ্রান্সিস, কঙ্গোর চিকিৎসক ডেনিস মাকোয়েজ, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও রাশিয়ার সংবাদপত্র নভোয়া গেজেটার নামও ছিলো।
উল্লেখ্য, ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার প্রদানের পদ্ধতি চালু রয়েছে। সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মোট ছয়টি বিষয়ে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। বিষয়গুলো হচ্ছে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা শাস্ত্র, অর্থনীতি, সাহিত্য এবং শান্তি। ১৯০১ সালের পর থেকে এই পুরস্কার এখন পর্যন্ত মোট ১০৩ জন ব্যক্তি ও ২৫ টি প্রতিষ্ঠানকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
০৯ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/