আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সিরিয়া, ছোট্ট একটি দেশ। আয়তন ১ লাখ ৮৫ হাজার ১৮০ বর্গকিলোমিটার। অথচ এখন এই দেশটির ওপর চক্কর দিচ্ছে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর জঙ্গিবিমানগুলো।
যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের জঙ্গিবিমানগুলো সেখানে হামলা চালাচ্ছে বহুদিন ধরেই। এবার হামলায় অংশ নিচ্ছে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান। এ এক বিরল ঘটনা- দেশটির আকাশসীমায় এখন গর্জে উঠছে চীন ব্যতীত বর্তমান বিশ্বের সামরিক শক্তিধর দেশগুলোর জঙ্গিবিমানগুলো।
এরফলে বাগদাদের এখনকার দৃশ্যাবলী নাটকের মতই মনে হবে।
যেমন বুধবার সকাল ৯ টায় একজন রাশিয়ান জেনারেল মার্কিন দূতাবাসে এসে হাজির। তিনি এসেই আমেরিকাকে শাসিয়ে যান এই বলে যে সিরিয়ার আকাশ থেকে মার্কিন বিমানগুলো সরিয়ে নিতে হবে। কারণ এখন রাশিয়ার বিমান সিরিয়ায় বোমা হামলা শুরু করবে।
তবে আমেরিকা তো আর কারো হুমকিতে কান দেয়ার পাত্র নয়।
সিরিয়ার ছোট আকাশসীমায় দ্রুতগতিতে উড়তে থাকা আমেরিকার বিমান ক্রুদের নিরাপত্তা শঙ্কা থাকা স্বত্ত্বেও কর্মকর্তারা রাশিয়ার হুমকি প্রত্যাখান করেছেন।
আমেরিকান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার আইএসকে লক্ষ্য করে কমপক্ষে একটি হামলা চালানো হয় এবং এ হামলার স্থান ও সময় কিছুই রাশিয়াকে জানানো হয়নি।
আমেরিকার প্রতিরক্ষা সচিব অ্যাশ কার্টার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘যৌথবাহিনী আজকের মতই ইরাক ও সিরিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে যাবে।’
বস্তুত চীন ব্যতিত অন্যসব পরাশক্তিই এখন সিরিয়ার যুদ্ধে সক্রিয়। এর ফলে সিরিয়ায় ৪ বছরব্যাপী চলমান গৃহযুদ্ধ এক নতুন রূপ ধারণ করেছে।
সাম্প্রতিককালে সিরিয়ার আকাশ এমনই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে যে একপক্ষ এসে আরেকপক্ষের সাথে আলোচনা করে ঠিক করে কে কখন সিরিয়ার আকাশে উড়তে পারবে এবং বোমাবর্ষণ করতে পারবে।
আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্সের পর সর্বশেষ রাশিয়া সিরিয়া যুদ্ধে যোগ দেয়ার পর থেকে সিরিয়ার আকাশে হরদম যুদ্ধ বিমানের আনাগোনা। মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণে প্রকম্পিত পুরো সিরিয়া। নির্বিচারে মারা পড়ছে আদম সন্তানেরা।
সকালে আমেরিকার বিমান সিরিয়ার আকাশ দখল করে বোমা হামলা করলো তো বিকেলে রাশিয়ার যুদ্ধবিমানের দখলে সিরিয়ার আকাশ। আবার রাতে হয়তো স্বমহিমায় ফরাসি আর ব্রিটিশ জঙ্গিবিমানগুলো।
সিরিয়ার মাটিতে এখন অহরহই নিক্ষিপ্ত হচ্ছে ভয়ঙ্কর সব মরণাস্ত্র।
সারা বিশ্বেরও নজর তাই সিরিয়ার দিকে। রাশিয়া যোগ দেয়ায় যুদ্ধের গতি কোন দিকে মোড় নেয় এখন সেটাই দেখার অপেক্ষায় সবাই।-নিউজউইক
১০ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ