আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 'আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে' মুসলিম অধ্যুষিত জিংজিয়াং প্রদেশের নাগরিকদের পাসপোর্ট সমর্পণের আদেশ দিল চীন সরকার। তাদের প্রদেশ ছেড়ে যাওয়ার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
অশান্ত অঞ্চলে ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর কড়াকড়ি শুরু করেছে বেজিং। এর জেরে উত্তর-পশ্চিম চিনের জিংজিয়াং উইঘুর এলাকার বাসিন্দাদের স্থানীয় থানায় তাদের পাসপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। একই ভাবে আকসু প্রিফেকচারের অধিবাসীদেরও পাসপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার এই খবর জানিয়েছে দেশটির সরকারি সংবাদসংস্থা গ্লোবাল টাইমস ও ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। জমা দেওয়া পাসপোর্ট ফেরত পেতে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আবেদন করতে হবে বলেও সরকারের তরফে জানানো হয়েছে।
গত অক্টোবর মাসে চীনের শিহেজি শহরের জননিরাপত্তা ব্যুরো থেকেও অধিবাসীদের প্রতি এমনই নির্দেশ জারি করা হয়। সেই সময় অবশ্য 'বাত্সরিক পরীক্ষার কারণে' পাসপোর্ট জমা দিতে বলা হয়। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট লেখা হয়েছিল, 'যারা পাসপোর্ট জমা দিতে অস্বীকার করবেন, তাদের বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি হলে তার জন্য নিজেরাই দায়ী থাকবেন।'
পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের কাছাকাছি আন্তর্জাতিক সীমান্তের নিকটবর্তী কাশার শহরের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, কিছু দিন আগে তাকে ফোনে পুলিশের কাছে পাসপোর্ট সমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকি তার স্বামীর পাসপোর্টের আবেদনও পুলিশ খারিজ করেছে বলে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে সরকারের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, যে কোনও রকম ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আগে তা কর্তৃপক্ষকে বিস্তারিত জানাতে হবে।
উল্লেখ্য, চীনের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় জিংজিয়াং প্রদেশে পাসপোর্ট পাওয়া নিয়ে বিস্তর ঝামেলা পোয়াতে হয়। তবু কঠোর নিরাপত্তার ফাঁক গলে প্রতি মাসে বহু সংখ্যক উইঘুর প্রদেশীয় যুবা তুরস্ক-সহ অন্যান্য দেশে ঢুকে পড়ে।
চীনা গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুসারে, ইসলামিক স্টেটের হয়ে উইঘুর অঞ্চলের এমন বহু যুবা বর্তমানে সিরিয়ায় লড়াই করছে। গত ৬ বছর যাবত্ উইঘুরে হান প্রদেশীয় চীনাদের অভিবাসন কেন্দ্র করেও স্থানীয় মুসলিমরা ক্ষুব্ধ বলে জানা গিয়েছে। গত কয়েক বছরে উইঘুরে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে বলপেও জানিয়ে চীনা সংবাদসংস্থা যার পিছনে তুরস্কে আশ্রিত যুবাদের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছে বেজিং।
২৪ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি