আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রতিক গণহত্যা ও নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মালয়েশিয়ার হাজারো মানুষ। রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাঁচার অধিকার নিয়ে রাজধানী কুয়ালালামপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে মালয়েশিয়ানবাসী।
রোববার হাজার হাজার জনগণের সঙ্গে সেই গণর্যালিতে অংশ নিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাকও। তার সঙ্গে হাত মিলিয়ে যোগ দিয়েছেন মালয়েশিয়ার বিরোধী দল পার্টি ইসলাম সে-মালয়েশিয়া’র (পিএএস) সভাপতি আব্দুল হাদি আওয়াং।
এসময় মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শেষে নাজিব রাজ্জাক কড়া ভাষায় মিয়ানমার কে হুমকি দেন।
রাজাক বলেন, ‘মিয়ানমার সরকারকে অবশ্যই পশ্চিমাঞ্চলে রক্তপাত থামাতে হবে। এতে হাজারো রোহিঙ্গা বাস্তুহারা, নির্যাতন আর হত্যার শিকার হয়েছে।’
সু চির নোবেল পাওয়াকে ব্যঙ্গ করে নাজিব রাজাক বলেন, ‘অং সান সু চির নোবেলের কাজ কী? আমরা তাঁকে বলতে চাই, যথেষ্ট হয়েছে...আমরা অবশ্যই মুসলমান ও ইসলামকে রক্ষা করব।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান নিয়ে সমালোচনা অব্যাহত রেখেছে মালয়েশিয়া। সম্প্রতি মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে দেশটি।
সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দেশের আঞ্চলিক জোট আসিয়ানে মিয়ানমারের সদস্যপদ রাখার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন মালয়েশিয়ার এক জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী।
এদিকে, নাজিবের এই অবস্থানকেও বিশ্লেষকেরা অন্য চোখে দেখছেন। তাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক জেমস চিন বলেন, সাধারণ নির্বাচন কাছাকাছি হওয়ায় ইসলামিক নেতা হিসেবে নিজের অবস্থান শক্ত করতে সেখানে গেছেন নাজিব।
তুরস্কের আইপেক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ব্রিজেট ওয়েলশ বলেন, ‘নিজেকে ভালো অবস্থানে নিতে যেকোনো কিছু করবেন নাজিব। রোহিঙ্গার বিষয়টি তার একটি উদাহরণ। তাঁরা যদি রোহিঙ্গার বিষয়টিকে ঠিকমতো দেখতেন, তবে মালয়েশিয়ার মধ্যেই রোহিঙ্গাদের অবস্থান কেমন, সেটা আগে বিবেচনা করতেন।
প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাক শেষ পর্যন্ত লড়াই করার অঙ্গীকার করে বলেন, “তারা আমাকে সতর্ক করেছিল। কিন্তু আমার কিছু যায় আসে না। কারণ আমি এখানে এসেছি মুসলিম জনগোষ্ঠী এবং মালয়েশিয়ার জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে নিজের যোগ্যতা নিয়ে।
তিনি আরও বলেন, ৩ কোটি ১০ লাখ লোকের একটা সরকারের প্রধান হিসেবে আমাকে তারা কী করতে বলে? তারা কি চায় আমি চোখ বুজে থাকি? আমার মুখ বন্ধ করে রাখি?” আমি তা করব না। তাদেরকে (রোহিঙ্গা) আমাদের রক্ষা করতেই হবে। তারা আমাদের মুসলমান ভাই, তাদের জীবনের মূল্য আছে।
০৪ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/আ শি/এএস