আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারে চলমান রোহিঙ্গাদের উপর সহিংসতা থেকে জীবন রক্ষা করতে হাজার হাজার সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম পালাতে বাধ্য হয়েছেন নিজ ভূমি থেকে। এই সংকট পরিস্থিতিতে রাখাইনে 'মানবতাবিরোধী অপরাধ' সংঘটিত হওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে সম্মতির কথা জানিয়েছেন মিয়ানমারে মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াঙ্গি লি।
রোববার ইয়াঙ্গির বরাতে টাইম ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে রাখাইনে 'মানবতাবিরোধী অপরাধ' সংঘটনের কথা তুলে ধরা হয়। তিনি বলেন, 'আমি দেশেটির ভেতরের এবং আশেপাশের দেশগুলো থেকে বিভিন্ন প্রতিবেদন পেয়েছি, যাতে বুঝা যায় মিয়ানমার সরকার পরিস্থিতি সম্পর্কে যে দাবি করছে তা ঠিক নয়। আমরা প্রচুর নৃশংস ও পীড়াদায়ক ছবি ও ভিডিও দেখেছি।'
মানবাধিকার কর্মীদের অভিযোগ, দেশটির রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের উপর হামলার সময় আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা হয় নিষ্ক্রিয় ছিল অথবা বৌদ্ধদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে হামলায় অংশ নেয়। এতে প্রায় দেড় লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে।
ফের রাখাইনে সহিংসতা শুরু হওয়ার ঘটনায় সাম্প্রদায়িক মাসগুলোতে সেখান থেকে প্রায় ২২ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এ অবস্থায় রাখাইনে মানবিক তৎপরতা চালানোর অনুমতি দিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছন জাতিসংঘ কর্মকর্তা ইয়াঙ্গি লি।
যেখানে অভিযান চলছে, সেখানে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের প্রবেশ করতে দিচ্ছে না সরকারি বাহিনী। ২০১২ সালে রাখাইনের বৌদ্ধদের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার শিকার হয়ে এক লাখ ২৫ হাজার রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছিল।
গত নভেম্বরের শুরুতে মিয়ানমার সরকারের তত্ত্বাবধানে কয়েকজন বিদেশী কূটনীতিক এবং জাতিসংঘ কর্মকর্তা রাখাইনের আক্রান্ত এলাকায় যেতে সক্ষম হন। তবে এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন লি।
তিনি বলেন, 'এটি ছিল একটি গাইড-ট্যুর, এমনকি সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া উপস্থিতি ছিল। এর মধ্যেও লোকজন প্রতিনিধি দলের কাছে এসে কথা বলার চেষ্ঠা করেছিল। আমরা শুনেছি পরে এ কারণে তারা প্রতিহিংসার শিকার হয়েছিল এবং তাদের পাকড়াও করা হয়েছিল।'
গত অক্টোবরের শুরুর দিকে রাখাইনের তিনটি সীমান্ত চৌকিতে হামলায় নয়জন পুলিশ সদস্য নিহত হন। এ ঘটনার জন্য ইসলামপন্থীরা দায়ী দাবি করে রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো অবরোধ করে 'ক্লিয়ারেন্স অপারেশন' নামে অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী।
১২ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসবি