সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৫, ০৯:৪৫:৩৭

জিন-ভূত তাড়াতে ব্রিটেনে একি কাণ্ড

জিন-ভূত তাড়াতে ব্রিটেনে একি কাণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জিন-ভূত তাড়ানোর নানা কৌশলের কথা হরহামেশাই শোনা যায়। আমাদের দেশে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম, যোগাযোগ মাধ্যম এবং রেডিওতে প্রায় জিন-ভূত তাড়াতে গিয়ে নির্যাতনের নানা কৌশল অবলম্বনের কাহিনী জানা যায়। বিশেষ করে প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চলে এই ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে। তবে শহর বা নগরীর আধুনিক জীবনে জিন-ভূতের কথা তেমনটা শুনে যায় না। অর্থাৎ বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের নিম্ন মধ্য আয়ের দেশে জিন-ভূতের প্রবণতা খুব বেশি নয়। তবে ভূতের বিষয়টা অনেকের কাছেই শুধু কল্প কাহিনী।

তবে যুক্তরাজ্যের মতো প্রথম সারির দেশে জিন-ভূত মোটেও কল্প কাহিনী নয়। অধিকাংশ ব্রিটিশ নাগরিকই ভূতের ভয়ে রাতের আঁধারে একা ঘর থেকে বের হন না। সেখানে জিন-ভূত তাড়ানোর নামে নির্যাতনের বহু ঘটনা ঘটে।

আজ সোমবার বিবিসির বরাত দিয়ে অর্থসূচকের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ব্রিটেনে শয়তান বা জিন-ভূত তাড়ানোর নামে প্রতি বছরই প্রচুর শিশু নির্যাতনের শিকার হয়। সেই সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে।

ব্রিটেনের মেট্রোপলিটন পুলিশের বলেন, জিন-ভূত তাড়ানোর নামে ২০১৫ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৬০টির বেশি শিশু নির্যাতনের খরব পাওয়া গেছে। অথচ ২০১৩ সালে এই ধরনের নির্যাতনের অভিযোগ ছিল ২৩টি এবং ২০১৪ সালে তা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছিল। এধরনের অপরাধ দমনে লন্ডনে কাজ করছে পুলিশের একটি বিশেষ বাহিনী। এই গ্রুপের নাম প্রজেক্ট ভায়োলেট।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, ধর্মীয় বিশ্বাসের নামে এসব শিশু নির্যাতনের অপরাধের ঘটনা ঘটছে।

পুলিশ জানিয়েছে, জিন-ভূত তাড়ানোর নামে নির্যাতনের শিকার হওয়া এক শিশুকে ২০০৭ সালে নাইজেরিয়া থেকে ইংল্যান্ডে আনা হয়েছিল। নাইজেরিয়ায় এক আত্মীয়ের বাসায় কাজ করতো সে। ওই বাড়ির কোনো বাচ্চা অসুস্থ হলেই তাকে দায়ী করা হতো। ওই পরিবারে তাকে ডাইনি খেতাব দেওয়া হয়েছিল। এরপর তার স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়। শারীরিকভাবেও তাকে নির্যাতন করা হয়।

ওই শিশু জানায়, চিকিৎসার জন্য তাকে স্থানীয় একটি গীর্জাতে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে তাকে ঝাড়ু দিয়ে পেটানো হয়। এরপর প্রতিবেশী এক নাইজেরিয়ান মহিলার সাহায্যে ওই বাড়ি থেকে পালানোর পর তাকে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়।

পুলিশ জানায়, এই ধরনের অপরাধের সংখ্যা এখনও খুব কম। তবে প্রতি বছরই এটা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি ৯ বছরের এক শিশুকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করার পর সে জানিয়েছে, তাকে শয়তান খেতাব দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।

ব্রিটেনের অধিকাংশ নাগরিকের ধারণা, শুধু আফ্রিকান পরিবারগুলোতেই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।

শিশুদের কল্যাণে কাজ করে এরকম বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকর্তারা জানান, ব্রিটেনে বসবাসকারী দক্ষিণ এশিয়ার পরিবারগুলোতেও একই ধরনের অপরাধ হচ্ছে।
১২ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে