শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১০:০১:১৮

পাক তরুণীকে ভালোবেসে সীমান্ত পার ভারতীয় যুবকের, অতঃপর ভয়াবহ...

পাক তরুণীকে ভালোবেসে সীমান্ত পার ভারতীয় যুবকের, অতঃপর ভয়াবহ...

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যশ চোপড়ার ‘বীরজারা’ সিনেমার কথা মনে আছে? হিন্দু শিখ ভারতীয় ছেলে বীর ভালবেসেছিল পাকিস্তানের জারাকে৷ কিন্তু শত্রু দেশের মেয়েকে ভালোবাসা কি মুখের কথা? জারাকে ভালোবেশে প্রায় পুরো জীবনটাই পাকিস্তানের জেলে কেটে গিয়েছিল বীরের৷ খবর জিনিউজের।

শেষমেশ বীর-জারার যখন মিল হল তখন দু’জনের জীবনেরই বেশিরভাগ বসন্ত কেটে গেছে৷  কিন্তু সে তো গেল সিনেমার কথা৷ তবে সিনেমার গল্প যখন বাস্তবের মাটিতে নেমে আসে, তখন কিন্তু বিষয়টা এতটা সহজ হয়না৷ আর তাই মুম্বাইয়ের ইঞ্জিনিয়ার হামিদ আনসারির গল্পটা কিন্তু একেবারেই আলাদা৷

হামিদ এখনও দেশে ফিরতে পারেননি৷  হামিদের জীবন কাটছে পাকিস্তানের জেলে৷  আদৌ তিনি দেশে ফিরতে পারবেন কিনা তাও জানা নেই হামিদের পরিবারের৷ অগত্যা নিরুপায় হয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন হামিদ আনসারির বাবা-মা৷

পাক তরুণীর সঙ্গে হামিদের পরিচয় ইন্টারনেটে৷ এরপর প্রেম ক্রমশ গাঢ় থেকে গাঢ়তর হয়৷ শেষমেশ পাক তরুণীর প্রেমে দিওয়ানা মুম্বাইয়ের ইঞ্জিনিয়ার সীমানা পেরিয়ে পৌঁছে যায় পাকিস্তানে৷  আর এটাই ছিল তার জীবনের কাল৷ সাহসিকতা দেখাতে গিয়েই নিজের বিপদ ডেকে আনেন হামিদ৷

সালটা ২০১২, ১০ নভেম্বর, ওই দিনই হামিদের সঙ্গে তার মা-বাবা ফৌজিয়া আনসারি ও নেহাল আনসারির শেষ কথা হয়৷  হামিদ তার পরিবারকে জানিয়েছিল ১২ তারিখের মধ্যেই তিনি দেশে ফিরবেন৷ তবে ফিরতে পারেননি৷ হামিদের মা ফৌজিয়া আনসারি যতটা জানতে পেরেছেন পাকিস্তানে গিয়ে বেশকিছু লোকজনের ফাঁদে পড়ে যায় হামিদ৷ যা সোজা তাকে পৌঁছে দেয় গারদে৷ গত কয়েক বছর ধরে পাক জেলেই রয়েছেন হামিদ৷ এদিকে হামিদের প্রেমিকা, ওই পাক তরুণীকে জোর করে অন্যত্র বিয়ে দিয়েছে তার পরিবার৷

ছেলেকে ফিরে পেতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকেও চিঠি লিখেছেন তার মা ফৌজিয়া৷ যাতে জেলের ভিতর থাকা হামিদের সঙ্গে তিনি কথা বলার সুযোগ পান সেই অনুরোধ করা হয়৷ তবে কোনও লাভ হয়নি৷ এরপর মুম্বাইয়ের কলেজের অধ্যাপিকা ফৌজিয়া ছেলের জন্য প্রায় ৫ বার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন৷

ফৌজিয়া জানিয়েছেন হামিদকে দেশে ফেরাতে সরকার চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখবে না বলেও আশ্বাস দেন সুষমা স্বরাজ৷  কিন্তু এ কি আর যে সে দেশ! হামিদ যে খোদ শত্রু দেশের কারগারে বন্দি৷  তাই শেষমেশ প্রধানমন্ত্রীর দফতরের দ্বারস্থ হামিদের পরিবার৷

ফৌজিয়া জানাচ্ছেন,  কিছুদিন আগেই তিনি খবর পেয়েছেন হামিদকে পেশোয়ার হাইকোর্টে তোলা হবে৷ সেখানে সেনা হেফাজতে নেওয়া হতে পারে হামিদকে৷ যাতে শাস্তি স্বরূপ তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে তার৷  অথচ এই শাস্তি ইতিমধ্যেই হামিদ ভোগ করে ফেলেছেন৷  কিন্তু তারপরেও তাকে আদৌ ছাড়া হবে কিনা, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই৷ যদিও জানা গিয়েছে, যেদিন থেকে হামিদ জেলে গেছে জিনাত শেহেজাদি নামে এক পাক মহিলা হামিদকে সাহায্যের চেষ্টা করছেন৷

কি ঘটনার সঙ্গে বীর-জারার কাহিনির সঙ্গে মিল পাচ্ছেন? তবে এক্ষেত্রে বীর-জারার মত হামিদের আর তার প্রেমিকার মিল হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই৷ ছেলে কবে দেশে ফিরবে এখন সেই অপেক্ষায় দিন গুনছেন হামিদের মা-বাবা৷

৩০ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে