আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফুটফুটে আদরের সন্তান। ও যে ছিল মা-বাবার কলিজার টুকরো। চলে গেছে না ফেরার দেশে। ওর জন্য মন কাঁদে মা-বাবার। এখনো ফিরে আসার প্রতীক্ষায় মা-বাবা। কিন্তু কোনোদিন সে আর ফিরে আসবে না। তবে আত্মবিশ্বাস হারা হননি তারা।
থাইল্যান্ডে এ বছরের শুরুর দিকে দুই বছরের একটি শিশুর মৃত্যুর পর থেকে তাকে হিমায়িত করে রাখা হয়েছে। আবার ফিরে আসবে এ প্রত্যাশায়। শিশুটিকে মনে করা হচ্ছে, হিমায়িত সর্বকনিষ্ঠ কোনো রোগী হিসেবে। তার মৃত্যুর কয়েক মুহূর্ত পরই তার মস্তিষ্ক সংরক্ষণ করা হয়। আর দেহ হিমায়িত করে রাখা হয়।
শিশুটির নাম ম্যাথেরিন নাভারাতপং। বিরল ধরনের এক ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েএ বছরের ৮ জানুয়ারি মারা যায় সে। তার বা-মা দুজনই স্বাস্থ্য প্রকৌশলী। ব্যাংকক শহর থেকে কিছুটা দূরে নিজেদের বাসভবনে শিশুটির বাবা সাহাতর্ন বলছিলেন, যেদিন সে প্রথম অসুস্থ হলো সেইদিনই আমার মাথায় প্রথম চিন্তাটা এলো।
মনে হলো বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে কিছু একটা করতে হবে, যাতে করে যতটা সম্ভব মানবিকভাবে তাকে আমাদের মাঝে রাখা সম্ভব হয়। যদিও বিষয়টি নিয়ে আমার মনের ভেতরেই দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছিল। পরে আমি আমার পরিবারের অন্যদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করি।
শিশুটির দেহ যে প্রযুক্তিতে হিমায়িত করে রাখা হযেছে তাকে বলা হয় ক্রাইওনিকস। এতে বিশ্বাস করা হয় যে, মৃতদেহ কিংবা মস্তিস্ক মৃত্যুর সাথে সাথে সংরক্ষণ করা হয়।
এরপর একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তা সংরক্ষণ করা হবে। ভবিষ্যতে চিকিৎসা ব্যবস্থার অসাধারণ অগ্রগতির ফলে তাকে আবার পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব হবে।
ওই দম্পতির আরও তিনটি সন্তান রয়েছে। সাহার্তন বলছেন, বৈজ্ঞানিক হিসেবে তিনি শতভাগ আত্মবিশ্বাসী যে, একদিন এমনটা নিশ্চই ঘটবে। তবে কবে তা তারা জানেন না। তবে ৩০ বছর সময় লাগতে পারে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
মানবদেহের টিস্যুর বড় ধরনের ক্ষতি ছাড়াই এ বিশেষ প্রক্রিয়ায় দেহ হিমায়িত করা হয়। মৃত্যুর পর ম্যাথেরিনের দেহ যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় নিয়ে যাওয়ার পর মস্তিস্ক আলাদা করা হয় এবং ১৯৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা হয়।
বিষয়টি নির্মম এবং অনেকটা সায়েন্স ফিকশনের মত শোনালেও এ পরিবারটির কাছে তা সন্তান হারানোর গভীর এক বেদনা। তাকে ফিরে পাবার অদ্ভূত আকুতি।
১৫ অক্টোবর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম