আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পঁচিশ বছরের পুরনো বন্ধুত্ব ভেঙে গত বছরের বিধানসভা ভোটে মুখোমুখি লড়াই করেছিল দু’দল। আবার সরকার গড়ার সময় এল যখন, চরম দরকষাকষির পরে জোটও গড়েছিল তারা। কিন্তু মহারাষ্ট্রের দেবেন্দ্র ফডণবীসের সরকার এক বছর না পেরোতেই এখন কার্যত ভাঙনের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে বিজেপি-শিবসেনার জোট।
শিবসেনার সঙ্গে সম্পর্ক টিঁকিয়ে রাখা নিয়ে বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ে আলোচনায় বসছে বিজেপি। দলের নেতারা বিকল্প ব্যবস্থার খোঁজে শারদ পাওয়ারের এনসিপি-র সঙ্গেও যোগাযোগ শুরু করেছেন।
লড়াইয়ের জমিটা তৈরি ছিল আগেই। মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে অভ্যস্ত শিবসেনা মহারাষ্ট্রের সরকারে নতুন অঙ্কে বড় শরিক বিজেপিকে মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। তাই সরকারের শরিকদের মধ্যে রোজই চলছিল বিবৃতির লড়াই। এ বার দেবেন্দ্র ফডণবীস সরকারের বর্ষপূর্তির সময় এসেছে যখন, তখনই বিতর্ক গুলাম আলির অনুষ্ঠান, সুধীন্দ্র কুলকার্নিকে কালি লেপা নিয়ে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত যে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পর্যন্ত নিশানা করেছে শিবসেনা। এর পরেই মহারাষ্ট্রের জোট সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
২৮৮ সদস্যের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিজেপির সদস্য সংখ্যা ১২২। শিবসেনার রয়েছে ৬৩ জন বিধায়ক। কংগ্রেসের ৪২টি ও এনসিপির ৪১টি আসন রয়েছে। এখন এনসিপি, ছোট দলগুলি ও নির্দলদের সমর্থনে সরকার গড়ার বিকল্প খতিয়ে দেখছেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। কেননা, দলের অনেকেই মনে করছেন, উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বে শিবসেনা রোজই এমন সব কাণ্ড ঘটাচ্ছে, যার জেরে মোদি সরকারের ভাবমূর্তির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত শারদ পাওয়ারদের থেকে সমর্থনের নির্দিষ্ট আশ্বাস মেলার খবর নেই। বরং মহারাষ্ট্রে আসন্ন পৌরভোটে সব ক’টি প্রধান রাজনৈতিক দলেরই আলাদা লড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যদিও এর ভিতরেই পাওয়ারকে কাছে টানতে মরিয়া বিজেপি।
মহারাষ্ট্রের রাজনীতির সমীকরণের সঙ্গে দিল্লির অঙ্ককেও মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে শিবসেনা ও এনসিপির সাংসদদের সংখ্যার তুলনাও সামনে আসছে। রাজ্যসভায় সংখ্যালঘু মোদি সরকারের কাছে যা বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাৎপর্যের বিষয় হল, লোকসভায় শিবসেনার ১৬ জন সদস্য থাকলেও রাজ্যসভায় রয়েছেন ৩ জন সাংসদ। আবার মহারাষ্ট্র থেকে লোকসভায় এনসিপির ৪ জন সাংসদ থাকলেও রাজ্যসভায় রয়েছেন ৬ জন। সে দিক থেকে দেখলে পাওয়ারের সমর্থন নিয়ে বেশি আগ্রহী বিজেপি।
তবে জোট রাজনীতিতে যা সব থেকে বড়, পর্দার আড়ালের সেই দরকষাকষি কোথায় পৌঁছায়, এখন তারই অপেক্ষা।
১৬ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি