শনিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৭, ০৪:২৩:২৭

আবারও তুষারধসের কবলে ভারতীয় সেনা, নিখোঁজ ৫ সেনা!

আবারও তুষারধসের কবলে ভারতীয় সেনা, নিখোঁজ ৫ সেনা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভয়ঙ্কর তুষারপাতে বিপর্যস্ত কাশ্মীরে প্রকৃতি ক্রমশ করাল রূপ ধারণ করছে৷ আবারও তুষারধসের কবলে পড়লো ভারতীয় সেনার একটি ছাউনি৷ সেনা সূত্রে খবর, শনিবার কাশ্মীরের মাচিল সেক্টরে নামে ভয়ানক তুষারধস৷ চাপা পড়ে সেনার একটি ছাউনি৷ এদিনের ধসে পাঁচ সেনা সদস্য আটকে পড়েছেন বলে আশঙ্কা৷ ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে উদ্ধারকারী দল৷ চলছে উদ্ধারকার্য৷

ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনই উপত্যকার গুরেজ সেক্টরে তুষারধসের কবলে পড়েছিল ভারতীয় সেনার ছাউনি। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ১৫ সেনার৷ গতবছর, মার্চ মাসে সিয়াচেন হিমবাহে হওয়া এক তুষারধসে প্রাণ হারান ল্যান্সনায়েক হনুমনথাপ্পা-সহ ১১ সেনা। ছ’দিন প্রায় ২৫ ফুট বরফের নিচে চাপা পড়েছিলেন হনুমনথাপ্পা। জীবন ও মৃত্যুর সঙ্গে টানা লড়াইয়ের পর শহিদ হন তিনি৷

গত সপ্তাহ থেকেই কাশ্মীরের পরিস্থিতি বেশ কঠিন হয়ে উঠছিল। ক্রমাগত বরফ পড়ছিল কাশ্মীরের বিভিন্ন অঞ্চলে। এই অবস্থায় প্রহরায় থাকা ভারতীয় সেনাবাহিনীর জওয়ানরা যে প্রবল সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু এমন প্রতিকূল পরিস্থিতির তোয়াক্কা না করেই সদাজাগ্রত প্রহরীর ভূমিকা পালন করে চলেছিলেন তারা। তাঁদের সুবিধার জন্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

ক্রমাগত তাদের জন্য পাঠানো হচ্ছিল কেরোসিন, শীতবস্ত্র ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। যদিও এতেই সব সমস্যার সমাধান মিলছিল না৷ কিন্তু সেনারাও দমে যাওয়ার পাত্র নয়। নিজেদের দায়িত্ব থেকে এতটুকুও সরে আসেননি তারা। তুষারপাত অগ্রাহ্য করেই কর্তব্যে অবিচল ছিলেন। তবে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই গিয়েছিল।

লাগাতার তুষারপাতে ক্ষতিগ্রস্থ ভূ-স্বর্গের জনজীবন। পুরু বরফে চাপা পড়ে গিয়েছে ঘর-বাড়ি। আর এতেই বাড়ির ভিতর আটকে পড়েছিলেন কাশ্মীরের এক গর্ভবতী মহিলা। প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকার বরফ কেটে তাকে উদ্ধার করে ভারতীয় সেনার একটি দল

সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, তুষারধসের ফলে তীব্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনন্তনাগ জেলার তিনটি স্কুল এবং আটটি বিল্ডিং। সেই জেলারই দুই অন্তঃসত্বা মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। অনন্তনাগ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে আরু গ্রামে নিজের বাড়িতে আটকে পড়েছিলেন দিলশাদা। খবর পেতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছায় উদ্ধারকারী দলটি।

অন্তঃসত্বা মহিলাকে নিরাপদে বের করে আনার জন্য পহলগাঁও থেকে আরু পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তার বরফ সাফ করে সেনা। তারপর প্রায় ৮ কিলোমিটার পথ হেঁটে অতিক্রম করে অন্তঃসত্বার পরিবারকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়। একই ঘটনা ঘটে ককারনাগের পাঞ্জগাঁও গ্রামের অন্তঃসত্বা মাসুদা জানের সঙ্গেও। হাসপাতালে যাওয়ার পথেই তুষারধসে আটকে পড়েছিলেন তিনি। সেনাকর্মীরা এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়।
২৮ জানুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে