আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে মার্কিন নাগরিকদের ভ্রমণ সতর্কতা হালনাগাদ করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভ্রমণ সতর্কতা বহাল রয়েছে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে। সোমবার প্রকাশিত মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ সতর্কতাবিষয়ক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়। হালনাগাদকৃত নতুন সতর্কতায় দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া অংশে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামলার পরিকল্পনা করছে বলে অনুমান করছে মার্কিন সরকার।
এসব হামলা হতে পারে মার্কিন স্থাপনা, নাগরিক ও স্বার্থের ওপর। মার্কিন নাগরিকদের আফগানিস্তান সফর থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, দেশটির কোনো অংশই সহিংসতামুক্ত নয়। পাকিস্তান প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন, উপজাতি গোষ্ঠী ও অন্যান্য জঙ্গিরা মার্কিন নাগরিকদের জন্য হুমকিস্বরূপ। ভারতেও চরমপন্থি বিভিন্ন উপাদান সক্রিয় বলে উল্লেখ করা হয়। বাংলাদেশ নিয়ে বলা হয়, এখানে বহু লক্ষ্যবস্তু ও প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
পূর্ব এশিয়া ও প্যাসিফিকের দেশগুলোর মধ্যে ভ্রমণ সতর্কতা বলবৎ রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও ফিলিপাইনে। ইউরোপের তালিকায় রয়েছে তুরস্ক ও ইউক্রেইন। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় রয়েছে আলজেরিয়া, মিশর, ইরান, ইরাক, ইসরাইল, পশ্চিম তীর, গাজা, জর্ডান লেবানন, লিবিয়া, সৌদি আরব, সিরিয়া, তিউনিশিয়া ও ইয়েমেন। আফ্রিকার বুরকিনা ফাসো, বুরুন্ডি, ক্যামেরুন, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, চাদ, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, মালি, মৌরিতানিয়া, নাইজার, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, রিপাবলিক অব সাউথ সুদান ও সুদান। আর পশ্চিম গোলার্ধ শীর্ষক অঞ্চলে ভ্রমণ সতর্কতা বহাল রয়েছে কলোম্বিয়া, এল সালভেদর, হাইতি, হন্ডুরাস, মেক্সিকো ও ভেনেজুয়েলার নাম।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন রিপোর্টটিতে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে সফররত মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য মন্ত্রণালয়ের প্রচেষ্টা হিসেবে এই হালনাগাদ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক সহিংসতা ও অপরাধ সংক্রান্ত তথ্যের ভিত্তিতে রিপোর্টটি প্রস্তুত করা হয়। সোমবারের এই বিশ্বব্যাপী সতর্কতার রিপোর্ট গত বছর ৯ই সেপ্টেম্বরের সর্বশেষ রিপোর্টের বদলে কার্যকর হবে।
সন্ত্রাসী হামলা, রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় পরিবর্তন ও সহিংসতা অনেক সময় আকস্মিক ঘটে থাকে উল্লেখ করে মার্কিন নাগরিকদের উচ্চমাত্রার সতর্কতা অবলম্বন, যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ এবং নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে অধিকতর সচেতন থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
রিপোর্টে আরো বলা হয়, বিশ্বজুড়ে মার্কিন সরকারের স্থাপনাগুলো উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। নিজেদের নিরাপত্তা বিষয়ক অবস্থান পর্যালোচনার স্বার্থে এসব স্থাপনা সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ বা নির্দিষ্ট বিরতিতে পাবলিক সার্ভিস বন্ধ রাখতে পারে। তেমন ক্ষেত্রগুলোতে সংশ্লিষ্ট মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলো মার্কিন নাগরিকদের জরুরি সেবা দেয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। বিদেশে থাকা মার্কিন নাগরিকদের স্থানীয় সংবাদ পর্যবেক্ষণ করার পরামর্শ দেয়া হয়।
সন্ত্রাসী হুমকি নিয়ে বলা হয়, আইসিস, আল কায়েদা, তাদের সহযোগী এবং এমন গোষ্ঠী থেকে অনুপ্রাণিত সংগঠনগুলো মার্কিন নাগরিকদের ওপর হামলা করার মানসিকতা পোষণ করে। উগ্রপন্থিরা মার্কিন সরকারের স্বার্থ ও ব্যক্তিগত স্বার্থকে টার্গেট করার জন্য প্রচলিত বা অপ্রচলিত অস্ত্রের ব্যবহার করতে পারে। সতর্ক করে বলা হয়, সন্ত্রাসীরা ক্রমাগত সহজ (সফট) টার্গেট বেছে নিচ্ছে। এমন টার্গেট হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, হাই প্রোফাইল পাবলিক ইভেন্ট (ক্রিয়া প্রতিযোগিতা, রাজনৈতিক সমাবেশ, সভা, ছুটির দিনের আয়োজন, কোনো কিছু উদযাপনের আয়োজন, ইত্যাদি), হোটেল, ক্লাব, রেস্তোরাঁ, উপাসনালয়, স্কুল, পার্ক, শপিং মল, মার্কেট, পর্যটন স্থাপনা, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ও বিমানবন্দর। এমজমিন
০৯ মার্চ ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসবি