বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৫, ০১:৩৫:১০

এবার গ্রেট গ্রীণ ওয়াল গড়বে চীন

 এবার গ্রেট গ্রীণ ওয়াল গড়বে চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বনায়নের এক মহাপরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছে চীন। ২০৫০ সালে চীন সরকারের নেয়া এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে চীনে বনের পরিমান ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৫ শতাংশে দাড়াবে। চীনের বনায়নের এ মহাপরিকল্পনা চীনা জাতির নির্মিত মহাপ্রাচীরের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। যতদূর জানা যায় খ্রীষ্ট পূর্ব ২০০ বছর পূর্বে নির্মিত মহাপ্রাচীরই আজকের চীনকে সবুজ বনানীর আরেকটি মহাপ্রাচীর নির্মানে উদ্বুদ্ধ করেছে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ এই গাছগাছালীর মহাপ্রাচীরটির সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে ২০৫০ সালে। পাথর, ইট ও অন্যান্য উপাদানে নির্মিত কংক্রিটের মহাপ্রাচীরটি নির্মিত হয়েছিল যুদ্ধ-বিগ্রহ থেকে চীনকে রক্ষা করতে। এবারের প্রাচীরটিও চীনকে রক্ষার উদ্দেশ্যেই নির্মাণ করা হচ্ছে, তবে তা যুদ্ধ থেকে নয়, পরিবেশ বিপর্যয় থেকে রক্ষার জন্য। পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীনে বনাঞ্চলের পরিমাণ মাত্র ৫ শতাংশ। অপরদিকে দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতির দেশটিতে কল-কারখানা নির্মাণ বেড়ে চলছে হু হু করে। পর্যাপ্ত গাছপালার অভাবের পাশাপাশি অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ দেশটির পরিবেশকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। এ অবস্থায় মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দেয় গোবি মরুভূমির আয়তন বৃদ্ধি। এ কারণে উত্তর চীনের গোবি মরুভূমি অঞ্চলের বিশাল এলাকাজুড়ে সবুজ বনায়নের পরিকল্পনা নেয় দেশটির সরকার। এ প্রকল্পকেই ‘দ্য গ্রেট গ্রিন ওয়াল’ নামে অভিহিত করা হয়। চীনা প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী গোবি মরুভূমির অধিকৃত ২৮০০ মাইল এলাকাজুড়ে ২০৫০ সালের মধ্যে ১০ হাজার কোটিরও বেশি গাছ লাগানো হবে। এ উদ্দেশ্যে গত কয়েক দশকে ইতোমধ্যে ৬ হাজার ৬০০ কোটি গাছ লাগানো হয়েছে। প্রকল্পটি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হলে চীনের মোট বনভূমির পরিমাণ ১৫ শতাংশে উন্নীত হবে। জলবায়ুর উষ্ণতা হ্রাসে তা ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই বনায়নের ইতিবাচক প্রভাব আশপাশের অঞ্চলগুলোতে পড়া শুরু করেছে । প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট নানা কারনে প্রকৃতি নিয়ে বিশ্ব ব্যাপী যেখানে শুধু উদ্বেগ আর উদ্বেগ সেখানে চীন দেশের এই উদ্যোগ শুধু সেদেশের জন্য নয় বিশ্বের জন্যও স্বস্তিদায়ক। নিজ দেশের জন্য চীন বনায়নের এই মহা পরিকল্পনা নিলেও সারা দুনিয়াই এর সুফল ভোগ করবে। যেমন চীনসহ শিল্পোন্নত দেশগুলোর মাত্রতিরিক্ত কার্বন নিঃশরণ ক্ষতি করে চলেছে তাবদ বিশ্বকে। এখন প্রশ্ন হলো চীনের এই বনায়নের উদ্যোগ বিশ্ববাসীকে কি ভাবে দেখা উচিৎ। তারা কি শুধু বিষ্ময়ের সাথে চীনের ‘দ্য গ্রেট গ্রীন ওয়াল’ দেখবে নাকি শিল্পায়ন ও মানুষের আধুনিক জীবন-যাপনের জন্য বর্তমান ও আগামী দুনিয়ার পরিবেশ ও প্রকৃতিতে যে সমূহ লোকসান হচ্ছে বা হবে তা পুষিয়ে নেয়ার জন্য তারাও কিছু করবে। চীনের উদ্যোগ যদি বাকি বিশ্ব বিশেষ করে শিল্পোন্নত বিশ্বকে অল্পবিস্তরও নাড়া দেয় তাহলেও আধুনিক যন্ত্র সভ্যতায় বিপর্যস্থ বিশ্ব প্রকৃতির জন্য কিছু করা হবে। - দ্য রিপোর্ট ২১ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/আসিফ/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে