আন্তর্জাতিক ডেস্ক: থানায় নিয়ে আসার সময়ে এই ‘রোমিও’-দের কেউ নিজের স্কুল ব্যাগ দিয়ে, কেউ বা দু’হাত দিয়েই সম্মান বাঁচাতে মুখ ঢেকেছে।
মেয়েদের স্কুলের বাইরে ছাত্রীদের উত্যক্ত করার অভিযোগে রীতিমতো স্কুল ব্যাগ সমেত পুলিশের হাতে ধরা পড়ল ৭ জন স্কুল ছাত্র। জলপাইগুড়ি কোতওয়ালি থানার পুলিশ এদের শনিবার জলপাইগুড়ি শহরের কদমতলা এবং সেন্ট্রাল গার্লস স্কুলের সামনে থেকে পাকড়াও করে।
থানায় নিয়ে আসার সময়ে এই ‘রোমিও’দের কেউ নিজের স্কুল ব্যাগ দিয়ে, কেউ বা দু’হাত দিয়েই সম্মান বাঁচাতে মুখ ঢেকেছে। যদিও বিকেলের পরে এই রোমিওদের অভিভাবকদের থানায় ডেকে সাবধান করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জলপাইগুড়ি শহরের একাধিক মেয়েদের বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পুলিশকে অভিযোগ করা হয়েছিল স্কুলের বাইরে ‘রোমিও’দের দাপট বন্ধ করা নিয়ে। জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি জানিয়েছেন, ‘আমরা নির্দিষ্ট অভিযোগের উপরে ভিত্তি করেই ইভটিজারদের ধরপাকড়ের অভিযান চালাচ্ছি। কোতওয়ালি থানার পুলিশও আমাদের সঙ্গে রয়েছে। এই অভিযান জারি থাকবে।’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক দিন ধরেই মেয়েদের স্কুলের সামনে বিভিন্ন ছেলেদের স্কুলের ছাত্র এবং স্কুল গণ্ডির বাইরে থাকা ‘দাদা’-দের বিরুদ্ধে ইভটিজিং-এর অভিযোগ আসছিল। স্কুল ছুটির পর এবং বাড়ি থেকে স্কুলের আসার রাস্তায় ছাত্রীদের গত কয়েক দিন ধরেই উত্যক্ত করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ।
এ দিন শহরের কদমতলা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এবং সেন্ট্রাল গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে দুপুরে ছুটির পর ৭ জন রোমিওকে কোতওয়ালি থানার পুলিশ সাদা পোশাকে গিয়ে হাতেনাতে ধরে ফেলে।
এই রোমিওদের মধ্যে ৩জন স্কুল ছাত্র, বাকি ৪ জন স্কুল গণ্ডির বাইরে থাকা যুবক। ধরপাকড়ের সময়ে আরও কয়েকজন বাইক নিয়ে চম্পট দেয়। কয়েকজন বাইক ফেলেই পালায়। থানায় নিয়ে আসা রোমিওদের একটি বাইক বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
কোতোয়ালি থানার আই সি শুভাশিস চাকী জানিয়েছেন, ৭ জনের অভিভাবকদের থানায় ডেকে সতর্ক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে স্কুল ফাঁকি দিয়ে মেয়েদের স্কুলের বাইরে ছাত্রীদের উত্যক্ত করার অভিযোগ উঠলে, বা হাতেনাতে ধরা পড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবেন বলে আই সি জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে জলপাইগুড়ি রাষ্ট্রীয় উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সাগরিকা সেন এই বিষয়ে জানান, মেয়েদের স্কুলের বাইরে এই ধরনের ঘটনা নিন্দনীয়। ছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি এর সঙ্গে জড়িত। পুলিশি পদক্ষেপকে তিনি সাধুবাদ জানিয়েছেন।
জলপাইগুড়ি গড়ালবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ ঘোষ জানান, ইদানীং শহরের বেশ কিছু মেয়েদের স্কুল ও কলেজের সামনে কিছু ছাত্র, এবং স্কুলের বাইরে থাকা যুবকেরা মেয়েদের উত্যক্ত করছে।
এটা এক ধরনের সামাজিক অবক্ষয়ের নিদর্শন। তবে শুধু পুলিশ কেন, পথেঘাটে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে মেয়েদের নিজেদেরই প্রতিবাদে সরব হওয়া উচিত বলে অভিজিৎবাবু মনে করেন।-এবেলা
৮ এপ্রিল ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস