মিসরের নির্বাচনে ধর্মনিরপেক্ষ জোট এগিয়ে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিসরের বড় রাজনৈতিক দল মুসলিম ব্রাদারহুডকে বাদ দিয়ে দেশটিতে পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মিশরের রাজধানী কায়রোজুড়ে অসংখ্য ভোট কেন্দ্রের মতই ডক্কির পাশের একটি স্কুল সোমবার ছিল ভোটারশূণ্য। ভোটারবিহীন এ নির্বাচনে জয়ের পথে রয়েছে ধর্মনিরপেক্ষ জোট। কারণ দেশটির প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় বাসিন্দাদের কোনো আগ্রহ নেই। বেসরকারিভাবে পাওয়া খবরে এ তথ্য জানা গেছে। রোববার শুরু হওয়া নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ চলে টানা দুদিন। আগামী ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফা ভোটগ্রহণ হবে। ২ ডিসেম্বর নির্বাচনের ফলাফল পাওয়া যেতে পারে। খবর এএফপির।
খবরে জানা যায়, মিসরের দীর্ঘ বিলম্বিত এ পার্লামেন্ট নির্বাচনে মুসলিম ব্রাদারহুডকে বাদ দেয়ায় ভোটারদের উপস্থিতি একেবারেই কমে গেছে। কার্যকর বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে নতুন সংসদ স্বৈরশাসক আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির লৌহশাসনকে, যা সব ধরনের ভিন্নমতকেই চুরমার করে দিয়েছে, আরো দৃঢ় করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৩ সালে ইসলামপন্থী পূর্বসূরিকে উৎখাত করার পর সিসি মিশরে একচ্ছত্র ক্ষমতায় আসীন হয়েছেন এবং নতুন সংসদ তার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে রাবার স্ট্যাম্পের ভূমিকা নেবে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শরিফ ইসমাঈল বলেন, প্রথম দিনে ১৫-১৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। দেশটির ২৭ প্রদেশের ১৪টিতে ওই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দিন ভোটার বাড়াতে অর্ধবেলা সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হলেও ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি মেলেনি।
১৮ দিনের গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরশাসক হোসনি মুবারকের পতনের পর ২০১১ সালের ওই নির্বাচন ছিল মিশরের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচন। তবে ২০১১ সালের পর থেকে এবার ভোটার উপস্থিতি সবচেয়ে কম। ২০১১ সালের নির্বাচনে বিপ্লবী জজবা নিয়ে জনগণ তাতে ভোট দেয় এবং এতে ইসলামপন্থী মুসলিম ব্রাদারহুড জয়ী হয়।
২০১১ সালে মিসরের সাবেক স্বৈরশাসক হোসনি মোবারক ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশটির প্রথম অবাধ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে ব্রাদারহুড ৪৪ শতাংশ আসনে জয়লাভ করে। ওই পার্লামেন্ট ২০১২ সালের জুন মাসে ভেঙে দেয়া হয়। গত নির্বাচনে ৬২ শতাংশ ভোট পড়েছিল।
২০১৩ সালে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ইসলামপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর মিসরের প্রধান এ বিরোধী দলটি কখনোই কর্তৃপক্ষের সুনজরে ছিল না। গতবছর আল-সিসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর সিসি মুসলিম ব্রাদারহুডের ওপর মারাত্মক দমন অভিযান শুরু করেন। ওই দমন অভিযানের সময় মুরসির কয়েক হাজার সমর্থক নিহত ও কারারুদ্ধ করা হয়।
চার বছর আগে ভোট কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের দীর্ঘসারির ছবি মিশরীয়রা সামাজিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু এবার এমনকি সিসির সমর্থকদের মধ্যে তেমন উচ্ছ্বাস নেই। ২০১১ সালে জনগণের আশা ছিল। আজ তারা তা হারিয়ে ফেলেছেন।
২১ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�