শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৭, ০৭:১২:১০

বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল বাকি তিন বন্ধুর!

বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল বাকি তিন বন্ধুর!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলন্ত ট্রেনের দরজায় ঝুলে সেলফি তুলতে গিয়ে পড়ে গেল মোবাইল। সেটি উদ্ধারে ঝাঁপ দিলেন এক যুবক। তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে অন্য একটি ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল তিন বন্ধুর। আহত আরও এক। আর সেলফি তুলতে গিয়ে যিনি পড়ে গিয়েছিলেন তার হাতে চোট লেগেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতের কলকাতার হাওড়ার লিলুয়া ও বেলুড়ের মাঝের ঘটনা।

প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানিয়েছেন, ভিড়ে ঠাসা আপ ব্যান্ডেল লোকালে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিল ৫ যুবক। ট্রেন লিলুয়া ষ্টেশন ছাড়ার পর তাদের মধ্যে একজন দরজার কাছে দাঁড়িয়ে নানান কায়দায় সেলফি তুলছিল। অন্য যাত্রীরা তাদের দরজার কাছ থেকে সরে আসতে বলেন। কিন্তু উপদেশে কান না দিয়েই সেলফি তোলা চালিয়ে যেতে থাকে ওই যুবকরা। ট্রেন বেলুড় স্টেশনে ঢোকার আগে আচমকাই সেলফি তুলতে গিয়ে হাত থেকে দামি স্মার্ট ফোন পড়ে বাইরে যায় এক যুবকের। ট্রেনের গতি একটু কম থাকায় চলন্ত ট্রেন থেকে হঠাৎ ওই যুবক ঝাঁপ দেয় মোবাইল উদ্ধারে।

অন্য ৪ বন্ধু এবং সহযাত্রীরা চিৎকার করে ওঠেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ট্রেন বেলুড় স্টেশনে ঢুকতেই ৪ বন্ধু ট্রেন থেকে মোবাইলের খোঁজে লাফ দেওয়া আরেক বন্ধুকে উদ্ধার করতে অন্য একটি লাইন ধরে লিলুয়ার দিকে ছুটতে শুরু করে। সেই সময় ওই লাইনে আপ গোঘাট লোকাল দ্রুতগতিতে আসছিল। ওই লাইনে ট্রেন আসছে এটা তারা খেয়ালই করেননি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে দ্রুতগতিতে আসা আপ গোঘাট লোকালের ধাক্কায় ছিটকে যায় ৪ বন্ধু। এক বন্ধু একটু পেছনে থাকায় বিপদ বুঝে সাইডের দিকে ঝাঁপ দেয়। তার ট্রেনের ধাক্কা লাগলেও তা প্রাণে বাঁচেন। তবে তার আঘাত গুরুতর। সামনে থাকা অন্য তিন বন্ধু ট্রেনের ধাক্কায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।  

ততক্ষণে খবর পেয়ে আরপিএফ, জিআরপি ছুটে আসে। যে বন্ধুটির মোবাইল পড়ে গিয়েছিল সেই তারকনাথ মান্নাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে লিলুয়া রেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পাশ থেকে দামি স্মার্ট ফোনটিও উদ্ধার হয়েছে। অন্য আহত বন্ধু কাজল বিশ্বাসকেও গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  

মৃত তিন যুবকের পরিচয় জানা যায়নি। বয়স ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। আহতদের লিলুয়া রেল হাসপাতাল থেকে রাতে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জখম দুই যুবক নিজেদের নাম কোনও মতে বলতে পেরেছে। তবে ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় আর কিছুই বলতে পারছে না। মৃত যুবকদের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে রেল পুলিস।  

এদিকে, এই ঘটনার পর হাওড়া-ব্যান্ডেল শাখার আপ লাইনে ঘণ্টাখানেকের জন্য ট্রেন চলাচল ব্যহত হয়। রাত সাড়ে ৮টার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।-আজাকাল
১৪ এপ্রিল ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে