শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৭, ০১:০৭:৫৫

এক সেনা হত্যার প্রতিশোধেই সবচেয়ে ভয়ংকর বোমা নিক্ষেপ!

এক সেনা হত্যার প্রতিশোধেই সবচেয়ে ভয়ংকর বোমা নিক্ষেপ!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের নাঙ্গারহার প্রদেশে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সংঘর্ষে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর এক সদস্য নিহত হন। এর জের ধরেই বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে আইএস জঙ্গিদের অবস্থান লক্ষ্য করে সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা জিবিইউ-৪৩ নিক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

ওই বোমাটিকে ‘মাদার অব অল বোম্বস’ বলে উল্লেখ করা হয়। পারমাণবিক বোমা বাদ দিলে এটাই সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা। যুদ্ধক্ষেত্রে এই বোমাটি প্রথমবারের মতো নিক্ষেপ করা হয়।

নাঙ্গারহারে আইএসের শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে। গত ৮ এপ্রিল আফগান ও মার্কিন বাহিনী আইএসের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালায়। কিন্তু আইএসের বাঙ্কার ব্যবস্থাপনার জন্য এতে তাদের তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি। সেই সঙ্গে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন। তবে ওই সদস্যের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। এর জের ধরেই বৃহস্পতিবার আইএসের বাঙ্কার ব্যবস্থাপনা ধ্বংসের জন্য ভয়ংকর বোমাটি নিক্ষেপ করা হয়।  

মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের মুখপাত্র অ্যাডাম স্টাম্প বলেন, এই বোমাটি যুদ্ধে এই প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয়েছে। বোমাটি এমসি-১৩০ যুদ্ধ বিমান থেকে নিক্ষেপ করা হয়। আইএস জঙ্গিদের গোপন সুড়ঙ্গ, গুহা ও বাংকারে এ বোমা নিক্ষেপ করা হয়।

এ বোমা হামলায় হতাহতের নিশ্চিত কোনও তথ্য জানায়নি মার্কিন কর্তৃপক্ষ। তবে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, হামলায় বেশ কয়েকজন আইএস জঙ্গি নিহত হয়েছে।  

তবে এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি আফগানিস্তানে চালানো এ মার্কিন হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। এটা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নয়, বরং এটা অমানবিক ও নৃশংসভাবে আমাদের দেশকে নতুন ও ভয়ংকর বোমার পরীক্ষাক্ষেত্রে পরিণত করে তোলা। ’
এ ধরনের বোমার একেকটির ওজন হয় ১০ হাজার কিলোগ্রাম এবং প্রতিটিতে থাকে ৮ হাজার ১৬৪ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক। এটার বিস্ফোরণ ক্ষমতা ১১ টন টিএনটির সমান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমায় নিক্ষেপিত লিটল বয় নামক পারমাণবিক বোমাটির বিস্ফোরণ ক্ষমতা ছিল ১৫ টন।

ইরাকেও এ ধরনের বোমা মোতায়েন করা হয়েছে। তবে কখনও ব্যবহার করা হয়নি। জিপিএস নিয়ন্ত্রিত এই বোমাটি ইরাক যুদ্ধ শুরুর কয়েক দিন আগে ২০০৩ সালের মার্চ মাসে পরীক্ষামূলকভাবে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল।

আফগানিস্তানে মার্কিন ও আন্তর্জাতিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল জন নিকোলসন জানান, বোমাটি আইএসের সুড়ঙ্গ ও বাংকার লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আইএসের বিরুদ্ধে অভিযানে বাধা দূর এবং নিজেদের আক্রমণ বজায় রাখতে এটাই সবচেয়ে কার্যকর অস্ত্র।
১৪ এপ্রিল ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে