আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিষয়টিতে অনেকে রাজনৈতিক চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন। কারণ, প্রদীপের ৬৮টি বদলির মধ্যে ১৩টি ঘটেছে বর্তমান বিজেপি সরকারের বিগত আড়াই বছরের শাসনকালে।
ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস বা আইএএস অফিসারদের চাকরি বদলির চাকরি। এক দফতরে কিছু দিন কাজ করার পরে অন্য দফতরে বদলি হয়ে যাওয়াই আইএএস অফিসারদের চাকরির দস্তুর। কিন্তু তা বলে ৩৩ বছরে ৬৮ বার বদলি! হ্যাঁ, তেমনটাই ঘটেছে হরিয়ানার আইএএস অফিসার প্রদীপ কাসনির ক্ষেত্রে।
বুধবার হরিয়ানা সরকার ১৯ জন আইএস অফিসারের বদলির কথা ঘোষণা করেছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বরিষ্ঠ আমলা প্রদীপ কাসনির নামও, যিনি তাঁর ৩৩ বছরের কর্মজীবনে এই নিয়ে ৬৮তম বার বদলি হলেন।
বিষয়টিতে অনেকে রাজনৈতিক চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন। কারণ, প্রদীপের ৬৮টি বদলির মধ্যে ১৩টি ঘটেছে বর্তমান বিজেপি সরকারের বিগত আড়াই বছরের শাসনকালে।
৬৮তম বদলি হিসেবে প্রদীপকে বসানো হয়েছে হরিয়ানা খাদি ও গ্রামোদ্যোগ নিগমের মুখ্য আধিকারিকের পদে। এর আগে এই পদে ছিলেন গরিমা মিত্তল। গরিমাকে পাঠানো হয়েছে বুনিয়াদি শিক্ষা দফতরের ডিরেক্টরের পদে। এ ছাড়াও অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে গরিমাকে দেওয়া হয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতরের অতিরিক্ত কার্যনির্বাহকের পদ।
১৯৯৭ সালের আইএএস ব্যাচের অফিসার প্রদীপ কার্যত বদলির রেকর্ড করে ফেলেছেন। সরকারি চাকরিতে তাঁর থেকে বেশি বার বদলি হরিয়ানার অন্য কোনও কর্মচারীর হয়নি। ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে এক মাসের পরিসরে মোট তিন বার বদলি করা হয়েছিল তাঁকে।
কিন্তু এত ঘন ঘন বদলি হয় কেন কাসনির? তাঁর সহকর্মীদের মধ্যে অনেকেরই বক্তব্য, প্রদীপ আদপে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তিনি অত্যন্ত সৎ এবং কর্তব্যপরায়ণ অফিসার। সেই কারণেই তাঁর কাজকর্মের ফলে অনেক সময়ে বিপাকে পড়ে যায় শাসকগোষ্ঠী। উদাহরণ হিসেবে অনেকে তুলে আনছেন সেপ্টেম্বর ২০১৬-র একটি ঘটনা। সেই সময়ে গুরগাঁও-এর ডিভিশনাল কমিশনারের পদে ছিলেন প্রদীপ। রাজস্ব বিভাগের কর্মী এবং বিল্ডারদের মধ্যে ক্রিয়াশীল একটি অশুভ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি উদ্যোগী হয়েছিলেন। তার পরেই প্রদীপকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
সরকারি তরফে, বলা বাহুল্য, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা সংক্রান্ত এই সমস্ত অভিযোগ স্বীকার করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বক্তব্য, প্রদীপের সমস্ত বদলি নিছকই ‘রুটিন ট্রান্সফার’।
হরিয়ানার সবচেয়ে বেশি বার বদলি হওয়া আধিকারিকদের মধ্যে প্রদীপের পরেই রয়েছে অশোক খেমকার নাম। তিনিও আইএএস অফিসার, এবং তিনিও যাবতীয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার অনমনীয় যোদ্ধা হিসেবেই সহকর্মীদের মধ্যে পরিচিত।-এবেলা
১৪ এপ্রিল ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস