বাংলাদেশের বন্ধুর ছেলে কানাডার প্রধানমন্ত্রী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কানাডার পার্লামেন্ট নির্বাচনে জাস্টিন ট্রুডোর নেতৃত্বাধীন লিবারেল পার্টি জয় লাভ করেছে। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে কনজারভেটিভদের নয় বছরের শাসনের অবসান ঘটল। ৪৩ বছর বয়সী জাস্টিন ট্রুডো দেশটির প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডোর ছেলে। পিয়েরে ট্রুডোকে আধুনিক কানাডার জনক হিসেবে মান্য করা হয়। বাংলাদেশের অন্যতম বন্ধুও ছিলেন পিয়েরে ট্রুডো। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামে বিশেষ অবদানের জন্য যে ১২৯ জন বিদেশি নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা মৈত্রী সম্মাননা পদক দেওয়া হয়, তাদের মধ্যে জাস্টিনের বাবা পিয়েরে ট্রুডো একজন।
তিনি ১৯৬৮ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত কানাডার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ২০০০ সালে তার মৃত্যু হয়। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার নিশ্চিত হওয়ার পর জাস্টিন ট্রুডো বলেন, প্রকৃত পরিবর্তনের লক্ষ্যেই কানাডিয়ানরা ভোট দিয়েছেন। তিনি বাজেট ঘাটতি পূরণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। কানাডার হাউস অব কমন্সের আসন সংখ্যা ৩৩৮টি। সরকার গঠনের জন্য ১৭০টি আসন পেতে হয়।
সোমবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জাস্টিন ট্রুডোর দল ১৮৪টি আসনে জয়লাভ করেছে। নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপারের কনজারভেটিভ পার্টি ৯৯টি আসন পেয়েছে। ইতিমধ্যে নিজ দলের পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন স্টিফেন হারপারে। তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করায় ট্রুডোকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন। দিন কয়েকের মধ্যেই তার প্রধানমন্ত্রীর পদ ও দলীয় প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। কানাডার নির্বাচনী ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রচারণা চালানো হয়েছে।
জরিপে দলগুলোর মধ্যে ব্যবধান ছিল সামান্যই। কিন্তু ফলাফলে জরিপের ফলাফল পাত্তা পায়নি। কানাডার অনেক নাগরিক এই নির্বাচনকে হারপারের ব্যবস্থাপনা রীতির ওপর একটি গণভোট বলে মনে করছেন। একপেশে শাসনের অভিযোগ তুলে অনেকে সমালোচনাও করেন তার। তবে দেশের অর্থনীতি সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে সংগ্রাম করে যাচ্ছিলেন হারপার। ট্রুডোর নির্বাচনী প্রচারের অন্যতম অঙ্গীকার ছিল উচ্চবিত্তের জন্য কর বাড়ানো ও মধ্যবিত্তের জন্য কর কমানো।
ফলাফলে দেখা গেছে, অন্টারিও, কুয়েবেক ও পশ্চিমাঞ্চলের প্রদেশগুলোতে লিবারেল দল ভালো করেছে। আটলান্টিকের উপকূলীয় প্রদেশগুলোতে লিবারেল পার্টি ৩২টি আসনে জয় পেয়েছে। এ অঞ্চলে তাদের জনপ্রিয়তা আগে থেকেই। এবার তা আরও বেড়েছে। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, অভূতপূর্ব এই জয়লাভের মাধ্যমে ট্রুডো পরিবার আবারও কানাডার ২৪ সাসেক্স ড্রাইভে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ফিরতে যাচ্ছে।
জাস্টিনের বাবা এখানে এক যুগ কাটিয়ে গেছেন। ১৯৭১ সালে ক্রিসমাস ডে-তে জন্ম নেন জাস্টিন। ১৯৮৪ সালে তার বাবা প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি পাদপ্রদীপে আসেন। বাবার মৃত্যুর পর তিনি সক্রিয়ভাবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।-এএফপি, বিবিসি
২২ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে
�