আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সপ্তাহখানেক আগেই সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন ধারণা করা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধেও যেকোনো সময় সামরিক পদক্ষেপ নেবে তারা।
এরই মধ্যে কোরীয় উপসাগরে রণতরী মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে হংকংভিত্তিক সংবাদপত্র ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ এক বিশ্লেষণে বলছে, সিরিয়া আর উত্তর কোরিয়া এক নয়। পত্রিকাটি বলছে, উত্তর কোরিয়ায় হামলার ক্ষেত্রে মোটা দাগে পাঁচটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে ট্রাম্পকে—
চুক্তির বেড়াজাল : কোরীয় উপত্যকা কৌশলগত কারণে এখনো যুদ্ধকবলিত একটি দেশ। যদিও ১৯৫৩ সালের ২৭ জুলাই ওয়াশিংটন ও পেইচিংয়ের সামরিক বাহিনীর মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি হয়। এখন যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালালে জাতিসংঘ সমর্থিত ওই চুক্তি লঙ্ঘন করা হবে।
উত্তর কোরিয়া ও সিরিয়ার মূল পার্থক্য : সিরিয়া তাদের পরমাণু অস্ত্র অনেক সীমিত করে ফেলেছে। উত্তর কোরিয়া ঠিক তার উল্টো। গত কয়েক বছরে পাঁচ দফা পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে তারা। সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী চার বছরের মধ্যেই দেশটি এমন পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বানাতে সক্ষম হবে, যেটা যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে পারবে। আবার উত্তর কোরিয়ার সামরিক সক্ষমতা-অক্ষমতা নিয়ে মন্তব্য করাটাও কঠিন। কেননা, ‘বিচ্ছিন্ন’ এ দেশটির পরমাণু কর্মকাণ্ড চলে পুরোপুরি গোপনে। ফলে পরিষ্কার তথ্য কারো কাছেই নেই।
পাশে দাঁড়াবে চীন : উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে বড় মিত্র হিসেবে পরিচিত চীন। ১৯৬১ সালে দুই দেশের মধ্যে একটি সামরিক চুক্তি হয়। ওই চুক্তি মোতাবেক, এক দেশ বহিরাগত কোনো শক্তির আক্রমণের শিকার হলে আরেক দেশ সামরিক সহযোগিতা দেবে। এ পর্যন্ত চুক্তিটি দুইবার নবায়ন করা হয়েছে, যার মেয়াদ আছে ২০২১ সাল পর্যন্ত।
চীন যুদ্ধ চায় না : উত্তর কোরিয়া হামলার শিকার হলে সবচেয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়বে চীন। কারণ, উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত এলাকায় তাদের বেশ কয়েকটি প্রদেশ অবস্থিত। হামলা হলে এসব প্রদেশে এবং সীমান্ত এলাকায় শরণার্থীদের ঢল নামবে।
যুদ্ধের বিরুদ্ধে আরো অনেকেই : দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানও যুদ্ধ চায় না। তাদের মত, শান্তিপূর্ণ কোনো উপায়ে সংকটের সমাধান হোক।
উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের দূরত্ব মাত্র ৪০ কিলোমিটার। এটা সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার। সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধ বেধে গেলে প্রথম ২৪ কিংবা ৪৮ ঘণ্টা সিউলকে রক্ষা করা ওয়াশিংটনের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়বে।-সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
১৬ এপ্রিল ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এইচএস/কেএস