বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:১৪:৩৮

তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হলে কেন বিশ্বে কেউ বাঁচবে না

তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হলে কেন বিশ্বে কেউ বাঁচবে না

রাশিদ রিয়াজ: যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হলে বা তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ বেঁধে গেলে দুনিয়ার কেউ বাঁচবে না।

এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পারমানবিক যুদ্ধ গবেষক গ্রেগ মেলো বলেছেন, আশঙ্কার কথা দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সংঘর্ষের সম্ভাবনা ক্রমবর্ধমান হচ্ছে।

সিরিয়ার বিমান ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ৫৯টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর দুই পরাশক্তির মধ্যে সম্পর্ক গত কয়েক সপ্তাহে খরায় পরিণত হয়েছে।

সিরিয়ায় যদি যুক্তরাষ্ট্র ফের হামলা করে তাহলে রাশিয়া সাবধান করে বলছে, বিশ্বের নিরাপত্তার জন্যে তা গুরুতর পরিণতি ডেকে আনবে।

মি মেলো বলছেন, সিরিয়ায় আরেকটি হামলা যদি যুক্তরাষ্ট্র করেই বসে তাহলে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে ভারসাম্য আর বজায় থাকবে না এবং পরিস্থিতি দ্রুত তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের দিকেই মোড় নেবে। আর তা শুরু হবে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে।

লস আলমস স্টাডি গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক গ্রেগ মেলো গ্লোবাল রিসার্চকে বলেন, পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্বের সবার বেঁচে থাকার আশা নিঃশেষ হয়ে যাবে কারণ তখন পরাশক্তিগুলোর মধ্যে ভারসাম্য পুরোপুরি বিনষ্ট হয়ে যাবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে প্রথম পারমাণবিক যুদ্ধের আঘাতে বিশ্বের সকলেই প্রায় মৃত্যুর মুখোমুখি গিয়ে মারা যেতে শুরু করবে।

দক্ষিণ গোলার্ধের কিছু মানুষ হয়ত পারমাণবিক যুদ্ধের ধকল সামলে প্রথম দিকে বেঁচে থাকবে কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারাও মারা পড়বে। এমনকি কয়েকটি পারমাণবিক অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও অর্থনীতিকে শেষ করে দিতে পারে।

পারমাণবিক হামলার কিছু সময়ের মধ্যেই বাজারে সরবরাহ ব্যবস্থা, আর্থিক বাজার এমনকি ইন্টারনেট অকার্যকর হয়ে পড়বে। পুরো বিশ্ব ব্যবস্থাপনাই ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে রুপান্তর ঘটবে।

গত সপ্তাহে মস্কোতে বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, রাশিয়ার সাথে তার দেশের সম্পর্ক ইতিমধ্যে তলানিতে পৌঁছেছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের দুই শীর্ষস্থানীয় পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে এধরনের সম্পর্ক মোটেই কাম্য নয়। যুক্তরাষ্ট্রের টার্গেট যদি ভøাদিমির পুতিন হয় তাহলে তা অবধারিতভাবেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর জন্যে যথেষ্ট।

যদিও দাফতরিকভাবে দুটি দেশ নিজেদের মধ্যে একটি বোঝাপড়ার নীতি নিয়ে চলে আসছে কিন্তু সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দ্রুত এ অবস্থার অবনতিও ঘটেছে।

এমনকি ছোট পরিসরে পারমাণবিক যুদ্ধও যুক্তরাষ্ট্রকে বড় ধরনের বিপর্যয়ে ফেলতে সক্ষম।

গ্রেগ মেলো সবাইকে মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, মাথায় এ বিষয়টি রাখুন আর তা হচ্ছে পারমাণবিক যুদ্ধ আর হিরোশিমায় যে বোমা ফেলা হয়েছিল সে আকৃতির নেই। পারমাণবিক যুদ্ধ নিয়ে আমাদের ধারণা বা চিন্তাশক্তি আসল পরিস্থিতি ঠাহর করা যাবে না।

পারমাণবিক যুদ্ধ মানে পারমাণবিক শীতকাল। এর মানে ইলেকট্রোনিক, অর্থনৈতিক, সরকারি, প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা স্থবির হয়ে পড়বে যা বিশ্বের সবাইকে বাঁচিয়ে রেখেছে।ড়িৎষফ-ধিৎ-৩-হঁপষবধৎ-ধিৎহরহম-৬০৬৮৪৩

তিনি বলেন, সৌভাগ্যবান নিজেকে কেউ মনে করতে পারেন এটি ভেবে যে পুনরায় তাকে উনবিংশ শতাব্দিতে ফিরে যেতে হবে।

কিন্তু যদি যথেষ্ট পরিমাণে পারমাণবিক অস্ত্র বা বোমা ব্যবহার হয় তাহলে পৃথিবীর ওজন স্তর ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কারণে সূর্যের তীব্র বিকিরণ সরাসরি আঘাত হানার কারণে আমরা সবাই অন্ধ হয়ে যাব।

যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধেই বিশ্বের প্রতিটি স্তন্যপায়ী প্রাণী ও গাছপালা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। জৈব ব্যবস্থাপনায় এক নাটকীয় ক্ষয় ও ধস নামবে।

গ্রেগ মেলো এমন এক সময় পারমাণবিক যুদ্ধের ভয়াবহতা নিয়ে সাবধানবাণী উচ্চারণ করলেন যখন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স জাপান সফরকালে উত্তর কোরিয়াকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন যদি দেশটির প্রেসিডেন্ট কিম জং উন আরো ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেন তাহলে তার বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র ‘অসাধারণ ও কার্যকর প্রতিক্রিয়া’ দেখাবে।

মার্কিন রণতরী থেকে তিনি এও বলেছেন, তলোয়ার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত।

ডেইলি স্টারের এ প্রতিবেদনে কোন দেশের কাছে কতটি পারমাণবিক অস্ত্র বা বোমা রয়েয়ে তার একটি হিসেবে দেওয়া হয়েছে।

সে হিসেবে দেখা যায়,

রাশিয়ার কাছে ৭ হাজার ৩০০,

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৬ হাজার ৯৭০,

ফ্রান্সের কাছে ৩০০,

চীনের কাছে ২৬০,

ব্রিটেনের কাছে ২১৫,

ইসরায়েলের কাছে ৮০,

পাকিস্তানে ১১০ থেকে ১৩০,

ভারতে ১০০ থেকে ১২০ ও

উত্তর কোরিয়ার কাছে ১০টি 

বা চেয়েও অধিক পারমাণবিক বোমা রয়েছে।-আমাদের সময়
২০ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে