পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে এক দানবীয় গ্রহাণু!
আন্তর্জাতি ডেস্ক : পৃথিবীর দিকে দ্রুতবেগে ধেয়ে আসছে একটি দানবীয় গ্রহাণু। বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী এই গ্রহাণু আছড়ে পড়বে পৃথিবীর বুকে। তার ফলে শেষ হয়ে যেতে পারে মনুষ্যকুল। গ্রহাণুর আঘাতে পৃথিবী ধ্বংসের গুজব নতুন কিছু নয়। মাঝে মধ্যে গুজবের পালে হাওয়া লাগে। হরহামেশাই শোনা যায় অমুক তারিখে ধ্বংস হবে পৃথিবী। অমুক দিন পৃথিবীর জন্য অশনি সংকেত। আসলে এসব দিন কিছুই ঘটেনি। প্রতিদিনের মত পৃথিবী তার নিজ কক্ষ পথে ঘুরপাক খাচ্ছে। কিন্তু এবার গুজবের পালের হাওয়াটা একটু বেশিই লেগেছে। গুজবে বলায়েছে, ৩১ অক্টোবর এক দানবীয় গ্রহাণু পৃথিবীকে পাশ কাটিয়ে যাবে। তবে এটি যদি পৃথিবীর ওপর আছড়ে পরে তবে লন্ডভন্ড হয়ে যেতে পারে আমাদের পৃথিবী।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গ্রহাণুটি এতই দ্রুতবেগে এগিয়ে আসছে যারে যে কোনও সময় ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাতে পারে এটি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আস্তই রয়েছে এই ধ্বংসাত্মক গ্রহাণু। কিভাবে এটি থামানো যায়, তা এখনও বিজ্ঞানীদের অজানা। সাধারণত পূর্বের গবেষণা অনুযায়ী মাধ্যাকর্ষণ ও ঘর্ষণের যৌথ প্রভাবে শক্তি হারায় গ্রহাণুগুলি। কিন্তু, বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে দেখেছেন ‘২০১৫ টিবি১৪৫’ নামের এই গ্রহাণুটি এতই বেশি গতিবেগে এগোচ্ছে, যে এই শক্তিগুলি তা কাছে হার মেনে যাচ্ছে।
মহাকাশে ৩১ অক্টোবরে আছড়ে পরবে বিশাল আকারের গ্রহাণু। এটি পৃথিবীর কাছ কাছ দিয়ে যাবে। এটি পৃথিবীর ৩ লাখ মাইল দূর দিয়ে যাবে। তবে ভয়ের কারণ নেই। পৃথিবীর ধারেকাছেও আসতে পারবে না এই গ্রহাণুটি। নাসার বিজ্ঞানীরা সপ্তাহ খানেক আগে এই গ্রহাণুর সন্ধান পেয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, এই গ্রহাণু পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে গেলেও পৃথিবীর কোনো ক্ষতি হবার সম্ভাবনা নেই।
তবে ভয়ের কারণটা হলো এই গ্রহাণুর আয়তন নিয়ে। এটি আকারে দানবীয়। উচ্চতায় এটি ৯৫০ ফুট থেকে ২১০০ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। এটির আয়তন হতে পারে ক্রিসলার বিল্ডিং কিংবা সাংহাই টাওয়ারের সমান। প্রত্যেক ২ ঘণ্টা ৬ মিনিটে একবার পাক খায় এটি। এই গতিবেগে গ্রহাণুটির ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এটি আছড়ে পরার সময় এটির সঙ্গে আরও অনেক উপাদান যোগ হবে। ফলে আয়তনটা অনেকাংশে বেড়ে যাবে।
পৃথিবীর পাশ কাটিয়ে যাবার সময়ে মোটামুটি ৩ লাখ মাইল দূরে থাকবে এই গ্রহাণু। অন্যভাবে বলতে গেলে বলা যায়, চাঁদ ও পৃথিবীর দুরত্বের মোটামুটি তিনগুণ দূর দিয়ে সে চলে যাবে। আকাশ পরিষ্কার থাকলে ভালো একজোড়া বাইনোকুলার দিয়েই একে দেখা সম্ভব হবে। কর্কট তারকাপুঞ্জের কাছে দেখা যাবে একে। দেখে যদিও মনে হবে সে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে, আসলে কিন্তু তার গতি ঘন্টায় ৩৫ হাজার মাইল। এতো বড় গ্রহাণুরা পৃথিবীর এতো কাছ দিয়ে সচরাচর যায় না। এ কারণে গবেষকেরা একে পর্যবেক্ষণের সুযোগ পেয়ে উৎসাহিত।
নাসার বিজ্ঞানী ডেভিড ফার্নোচিচিয়া পৃথিবীর বাসিন্দাদের আতংকিত না হবার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘ গ্রহাণু ২০১৫ টিবি১৪৫’ পৃথিবীর ওপর আছড়ে পড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই ভয় পাবার কোনো কারণ নেই।’
নাসা ইতোমধ্যে ৮ হাজার গ্রহাণুর তালিকা তৈরি করেছে। যেগুলোর আকৃতি খানিকটা বড়। এসব গ্রহাণু পৃথিবীর আশপাশ দিয়ে ঘুরঘুর করছে। কোনোটা পৃথিবীকে খুব কাছ দিয়ে পতিত হয়ে মহাশূন্যে মিলিয়ে যাচ্ছে।
২২ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�