আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শনিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ আল-ওতাবার ইনবক্স থেকে ইমেইলগুলো হ্যাক করা হয়। পরে হ্যাককৃত ইমেইলগুলো প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত ওই ইমেইলগুলোতে রাষ্ট্রদূত ইউসেফ আল-ওতাবার সাথে ইসরাইলের সমর্থক নয়া রক্ষণশীল থিংক ট্যাঙ্ক বলে পরিচিত ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসিএস (এফডিডি)-এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ইন্টারপ্রেট রিপোর্ট করেছে যে, গ্লোবাললেকস নামক একটি হ্যাকার গ্রুপ সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূতের ইমেইল হ্যাক করে প্রচার করেছে। পূর্বে তারা ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির ইমেইলগুলো প্রকাশ করেছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, হ্যাকাররা রাশিয়ার সাথে যুক্ত একটি ডটআরইউ(.ru ) ইমেইলের ঠিকানা ব্যবহার করেছিল।
প্রকাশিত ইমেইলগুলোতে রাষ্ট্রদূত ইউসেফ আল-ওতাবার সাথে নয়া রক্ষণশীল থিংক ট্যাঙ্ক, ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসিএস (এফডিডি)-এর সাথে বারবার যোগাযোগ করার প্রমাণ মিলেছে। ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসিএসের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন ইসরাইলের সমর্থক কোটিপতি শেডেন ডেলসন যিনি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর একান্ত আস্থাভাজন ব্যক্তি।
একটি ইমেইলের মধ্যে উল্লেখ আছে, এফডিডি জ্যেষ্ঠ কাউন্সিলর ,ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির প্রাক্তন উপ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন হান্নাহ ইমেইলে একটি প্রবন্ধ আল-ওতাবার কাছে পাঠান যেখানে তিনি দাবি করেন যে, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং এফডিডি উভয়ই তুরস্কের ১৫ জুলাইয়ের সামরিক অভ্যুত্থানের জন্য দায়ী।
পূর্বে জন হান্নাহ পররাষ্ট্রনীতিতে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেন যার শিরোনাম ছিলো ‘আপনি কিভাবে এরদোগানের মতো সমস্যা সমাধান করবেন?'
আল-ওতাবা এখানে পরামর্শ দেন যে, ‘তুর্কি সামরিক বাহিনী এরদোগানকে অপসারণের মাধ্যমে তুরস্ককে রক্ষা করবে।’
বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা হচ্ছেন এফডিডি সিইও মার্ক ডাবোভয়েজ, জন হান্নাহ ও জোনাথন শ্যানজার, এফডিডি ভাইস প্রেসিডেন্ট (গবেষণা)। তাদের আলোচনার বিষয়বস্তুগুলো হচ্ছে- ‘এরদোগানের কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্সি-এর প্রভাব’, ‘এরদোগানের আঞ্চলিক ভূমিকা ও উচ্চাভিলাষ’, ‘আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার হাতিয়ার হিসাবে আল জাজিরা’ এবং ‘সম্ভাব্য ইউএস-ইউএই নীতির আলোচনার জন্য ইরানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির ইতিবাচক প্রভাব’ ইত্যাদি।
অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টার পর ইউএই এর ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কিছু গণমাধ্যম বলেছে যে, ফিলিস্তিনি রাজনীতিবিদ মুহাম্মাদ ডাহলান, যিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাসিন্দা এবং আবুধাবীর যুবরাজ শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদের উপদেষ্টা, অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টার কয়েক সপ্তাহ আগে তিনি তুরস্কের অভ্যুত্থানের পরিকল্পনাকারীদের কাছে অর্থ পাঠান।
আরেকটি ইমেইলে হান্নাহ আল-ওতাবাকে বলেন যে, কাতার আরেকটি উপসাগরীয় রাষ্ট্র যার সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে মতভেদ রয়েছে কিন্তু ফিলিস্তিনি আন্দোলনের হামাস নেতারা একটি আমিরতি মালিকানাধীন হোটেলে অবস্থান করছে।
আল-ওতাবা বলছেন, এটা আমিরাতের সরকারের দোষ না। আসল ব্যাপারটা হল কাতারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি আছে। আপনারা সামরিক ঘাঁটি সরান, আমরা হোটেল হতে তাদের সরিয়ে দেব। সূত্র : ডেইলি সাবাহ্
জুন, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএস