আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ‘পৃথিবীর কেউ ভাল তো বাসে না, এ পৃথিবী ভাল বাসিতে জানে না’- এই উপলব্ধি আর কারোর নয়, পশ্চিমবঙ্গের পুরলিয়ার বহুল আলোচিত সুচবিদ্ধ করে শিশুকন্যা হত্যার দাগি আসামি সনাতন ঠাকুরের।
তবে তার এই উপলব্ধি হতে একটি সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যা যে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গিয়েছে। তাই এর কী আর কোনও মর্ম রইল! ভারতের উত্তরপ্রদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া নিয়ে আসার পথে ট্রেনের বার্থে হাতকড়া বাঁধা অবস্থায় শুয়ে থাকা সনাতনের গলা থেকে বেরিয়েছিল বিখ্যাত এই শ্যামাসঙ্গীতটি।
সম্প্রতি সামনে এসেছে সেই ভিডিও। তন্ত্র সাধনা করার পাশাপাশি গান করাটাও যে শখ ছিল খুনে অভিযুক্ত সনাতনের। অর্থ উপার্জনের আশায় উত্তরপ্রদেশে ছদ্মবেশ নিয়ে এই কাজই তো করছিল সে। শেষপর্যন্ত সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল।
এদিকে, গ্রেপ্তার হওয়ার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই বয়ান বদল অভিযুক্ত সনাতন ঠাকুরের। বুধবার পুরুলিয়া আদালতে তোলার আগে ‘ব্যাটার বৌ’-দের ঘাড়ে গোটা ঘটনার দোষ চাপিয়েছিল সে। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভোল বদলে পুলিশি জেরায় সে জানায়, এই ঘটনায় গৃহবধূ মঙ্গলার প্রেমিক জড়িত। যা শুনে রীতিমত হাঁ পুলিশ কর্মকর্তারা।
তবে পুরুলিয়ার সুচকান্ডে মূল অভিযুক্ত সনাতন ঠাকুর যে পুলিশকে বিভ্রান্ত করছে তা ইতিমধ্যে বুঝে গিয়েছেন তারা। কিন্তু পুলিশের কাছে খবর, সাড়ে তিন বছরের ওই মৃত শিশুকন্যাটি মঙ্গলার আগের স্বামীর নয়। তার প্রেমিকের ঔরসজাত! ফলে সবকিছু খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে ওই সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যাটিকে এই বুড়ো সনাতনই যে সুচ ফুটিয়ে ‘খুন’ করেছে তা একেবারে পরিষ্কার।
তবে প্রথমে স্বীকার না করলেও, পরে পুলিশি জেরায় শিশুটির শরীরে সুচ ফোটানোর কথা স্বীকার করেছে সনাতন। জেরায় সে জানিয়েছে, মঙ্গলা তার ‘প্রেমিকা’ ছিল। দীর্ঘদিন ধরে সনাতন তাকে ভালবাসে। তাই স্ত্রী মারা যাওয়ার পর মঙ্গলাকে বিয়ে করে নেয়। আর এরপরই ‘পথের কাঁটা’ ওই দুধের শিশুটিকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে সে।
পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস বলেন,“শিশুটিকে সুচ ফোটানোর বিষয়ে সনাতন উলটোপালটা কথা বলছে। এই ঘটনায় এখন ও মঙ্গলার আগের প্রেমিকের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। তবে মঙ্গলাকে সনাতন ভালবাসত বলেই সে বিয়ে করেছে বলে জানিয়েছে।”
এমটিনিউজ/এসএস