বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৭, ১১:২২:২৮

হানিপ্রীতকেই সঙ্গে চাই, জেলের মধ্য ছটফটানি রাম রহিমের

হানিপ্রীতকেই সঙ্গে চাই, জেলের মধ্য ছটফটানি রাম রহিমের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লোকের কাছে হানিপ্রীতের পরিচয় দেন পালিত কন্যা বলে। নিজের মেয়ে নয়, সেই হানিপ্রীতকেই জেলখানায় নিজের পাশে পেতে ছটফটিয়ে মরছেন পালক পিতা গুরমিত রাম রহিম সিং। সম্ভমহানীর অভিযোগ প্রমাণিত হয়ে জেলে যেতে হবে বুঝতে পেরে, আগে থেকেই ছক কষে রেখেছিলেন।

ডেরা সচ্চা সওদারই নিজস্ব হাসপাতাল ‘‌শাহ সতনাম জি স্পেশালিটি হসপিটাল’‌–এর মাইনে করা ডাক্তারদের দিয়ে নিজের একাধিক শারীরিক অসুবিধার ভুয়ো রিপোর্ট বানিয়ে রেখেছিলেন, যা পেশ করা হত আদালতের কাছে। এবং সেই কাগজপত্রে ডেরা প্রধানের যাবতীয় অসুস্থতার একটাই নিদান হেঁকেছেন ডাক্তাররা। হানিপ্রীত ইনসান–এর নিয়মিত দেখভালে থাকতে হবে গুরমিতকে।

অবিশ্বাস্য কিন্তু সত্যি যে, ডেরা হাসপাতালের ডাক্তাররা এরকমই আজব ব্যবস্থাপত্র লিখেছেন! যে, গুরুজির কন্যা, যিনি এতদিন নিয়মিত গুরুজির দেখভাল করেছেন, এবং যিনি রক্তচাপ আর রক্তে শর্করার মাত্রা পরিমাপে প্রশিক্ষিত, জেলে তিনিই ঘন ঘন গুরু মহারাজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন! সেই হাস্যকর মেডিক্যাল রিপোর্ট গুরুদেবের গাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এখন রোহতকের সুনারিয়া জেলে বসে ঘন ঘন হুঙ্কার ছাড়ছেন বাবাজি।

হুমকি দিচ্ছেন, হানিপ্রীতকে তার সঙ্গে থাকতে না দিলে সমস্ত জেলকর্তার চাকরি খাবেন। কখনও অবসন্ন হয়ে পড়ার নাটক করে বলছেন, এক্ষুনি হানিপ্রীত এসে তার সেবা শুরু না করলে তিনি মারাই যাবেন! অন্যদিকে হানিপ্রীতও বসে নেই। বাবা জেলে যাওয়ার পর থেকে তিনি চণ্ডীগড় এবং পাঞ্জাবের প্রশাসনিক ওপরমহলে যাদের চেনেন, সবাইকে ফোন করছেন। উকিলদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন।

ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণার আগের দিন গুরমিত রাম রহিম টুইট করেছিলেন, ‘‌আইনের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে। পিঠের ব্যথায় ভুগছি। তা হলেও কোর্টে হাজির হব।’ সেই পিঠের ব্যথার অজুহাতেই আদালতে সর্বক্ষণ গুরমিতের পাশে ছিলেন হানিপ্রীত। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর পাঁচকুলা থেকে হেলিকপ্টারে তাকে রোহতক উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হল, তখনও সঙ্গে হানিপ্রীত। কিন্তু তাকে হেলিকপ্টারে উঠতে দিল কে? কেনই বা ধর্ষণ মামলার ঘোষিত অপরাধীর সঙ্গে একজন বাইরের লোক? ‌

বাবাজি সে সব প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ‌মাইগ্রেন আর পিঠের ব্যথায় কাহিল তিনি। তাই হেলিকপ্টারে হানিপ্রীতকে রাখার অনুমতি আগেই আদালতের কাছ থেকে নিয়েছেন।‌ খটকা লাগতেই তদন্ত শুরু হয়। জানা যায়, সব বাজে কথা। আদালত এরকম কোনও অনুমতি দেয়নি। সরকারি কর্মীদের ডাহা মিথ্যা বলেছেন বাবাজি‌। তবে জেলে হানিপ্রীতকে রাখতে মরিয়া ‌বাবাজি সত্যিই পাঁচকুলার সিবিআই আদালতে আবেদন করেছিলেন।

মানবিক আবেদন। আর হানিপ্রীত করেছেন একেবারে আইনি আর্জি, উকিল মারফত। কিন্তু আবেদন নাকচ করেছে সিবিআই আদালত। জানিয়েছে, দোষী সাব্যস্ত আসামির কোনও সঙ্গী তার সঙ্গে জেলে থাকতে পারে কি না, সেটা আদালত ঠিক করে না। সরকার অথবা কারা কর্তৃপক্ষই এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আর কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পুরুষ অপরাধীর সেলে মহিলাদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে