বুধবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৪:২৭:৫৬

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সরকারের পাশেই ভারত : আশ্বাস মোদির

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সরকারের পাশেই ভারত : আশ্বাস মোদির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রোহিঙ্গা ইস্যুতে আং সু কি সরকারের পাশেই থাকছে ভারত। মিয়ানমারের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখণ্ডতা বজায় রাখতে সমস্ত রকমভাবে সাহায্য করবে ভারত। বুধবার এই আশ্বাস দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এদিন দেশটির রাজধানী নেইপিদাওয়ে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী নেতাদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান স্পষ্ট করেন মোদি। কোনওভাবেই পাহাড়ি দেশটির বুকে বিচ্ছিন্নতাবাদকে মেনে নেওয়া হবে না, স্পষ্ট করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।

এদিন, সুচির সঙ্গে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করেন নরেন্দ্র মোদি। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বর্তমানের অশান্ত সময়ে মিয়ানমারের পাশেই থাকবে পুরানো বন্ধু ভারত। এছাড়াও, দু’দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও উন্নত করার বিষয়েও এদিন বৈঠকে বসেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান।

তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে অভিযোগ উঠেছে, সেই বিষয়ে সরাসরি মুখ খোলেননি মোদি। হিমালয়ের কোলে অবস্থিত দেশটির রাখাইন প্রদেশে পৃথক ইসলামিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান ঘোষণা করেছে ‘দ্য আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি’ (এআরএসএ) নামের একটি সংগঠন।

এদিন ইসলামিক বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মোদি। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, প্রতিবেশী রাষ্ট্রটির উপর চীনের প্রভাব রুখতেই মোদির এই অবস্থান। ভুটান, মিয়ানমার ও নেপালের সঙ্গে  দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করার চেষ্টা চালাচ্ছে দিল্লী সাউথ ব্লক। তাই বিদ্রোহীদের কড়া বার্তা দিয়ে সুচি সরকারের সঙ্গে কুটনৈতিক স্তরে ভারতের সম্পর্ক আরও মজবুত করলেন মোদি, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহল মহল।

বৌদ্ধপ্রধান দেশ মায়ানমারে প্রায় ১০ লক্ষ মুসলিম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গাদের বাস। তবে আজও তাদের নাগরিক বলে স্বীকৃতি দেয়নি মিয়ানমার। মিলিটারি জুন্টা প্রশাসনের হাত থেকে দেশের আংশিক ক্ষমতা সুচির হাতে গেলেও পরিস্থিতি পালটায়নি। সুচি সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশকারী, তাদের ‘জঙ্গি আন্দোলন’ কোনওমতেই মেনে নেওয়া হবে না।

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনা ও রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের মধ্যে এখন প্রবল সংঘর্ষ চলছে। গত কয়েক সপ্তাহে তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। মিয়ানমার সেনার বিরুদ্ধে একাধিকবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ, রোহিঙ্গাদের নির্মমভাবে, নির্বিচারে হত্যা করছে সরকারি বাহিনী। সঙ্গে রয়েছে সম্ভ্রমহানী ও গণহত্যার মতো অভিযোগও। ফলে সুচি সরকারের উপর আন্তর্জাতিক মহলের চাপ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আশ্বাসে অনেকটাই স্বস্তিতে মিয়ানমারও।

বস্তুত, রাখাইন প্রদেশে সংঘর্ষের ফলে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল নেমেছে বাংলাদেশসহ অন্যান্য সীমান্তবর্তী দেশগুলিতে। বেশ কিছু রোহিঙ্গারা প্রবেশ করেছে ভারতেও। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদীদের যোগসাজশ রয়েছে।

এই বিষয়ে সতর্ক করে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং দ্রুত রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে ভারত থেকে বিতাড়িত করার নির্দেশ জারি করেছেন। রোহিঙ্গা সমস্যায় জর্জরিত পড়শি দেশ বাংলাদেশও।  এপর্যন্ত লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে।

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে