রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৯:৩১:৩১

চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্বে পার পেয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার

 চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্বে পার পেয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের প্রতিক্রিয়া কেবল সমালোচনা আর নিন্দার মধ্যেই আটকে থাকছে। নানা কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পশ্চিমা বিশ্ব নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি সরাসরি সামরিক অভিযান চালালেও মিয়ানমারের ব্যাপারে তারা অনেকটা হাত গুটিয়ে বসে আছে। মিয়ানমারের ভূরাজনৈতিক অবস্থানই তাদের সুরক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করছে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক আইনজীবী বেরি গ্রসম্যান।

ইরানের প্রেস টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গ্রসম্যান মিয়ানমার ইস্যুতে একদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পুরো আটলান্টিক বিশ্ব এবং অন্যদিকে এশিয়ার অন্যতম শক্তি চীনের ভূমিকা তুলে ধরেন। তাঁর মতে, ‘ভূরাজনৈতিক দাবার ছকে’ মিয়ানমার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। এ কারণে দেশটির সরকারি বাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে।

গ্রসম্যানের দাবি, ‘অং সান সু চির জনপ্রিয়তায় রং চড়িয়েছে আটলান্টিক বিশ্ব, যারা আসলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিশ্বকে নতুন করে বিন্যস্ত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। ’ আটলান্টিক বিশ্ব যে নতুন বিশ্ববিন্যাস গড়তে চায় সেটা মোটেই নিরপেক্ষ নয় বলে মনে করেন গ্রসম্যান। পক্ষপাতদুষ্ট এক বিশ্ব গড়ার স্বার্থে তারা সু চিকে মাত্রাতিরিক্ত জনপ্রিয় হিসেবে উপস্থাপন করেছে। সু চির সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তাঁর অবস্থানটা এমন, তিনি যদি রোহিঙ্গাদের ওপর রাষ্ট্রায়ত্ত সন্ত্রাসের নিন্দা জানান, তবে তিনি মিয়ানমারে তৃণমূলের সমর্থন পুরোটাই হারাবেন। তাই নিশ্চুপ থেকে তিনি এ ব্যাপারে নির্লিপ্ততা প্রকাশ করছেন বলে মনে হচ্ছে।

মিয়ানমারের ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা’খ্যাত, তার ওপর শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী সু চি রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা দেখেও যে মুখ বুজে আছেন এবং এসব সত্ত্বেও পশ্চিমা বিশ্ব যে বেশ নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে, সেটার কারণ সম্পর্কে গ্রসম্যান বলেন, ‘চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের নৈকট্য। ভূরাজনীতির পুরনো খেলায় দাবার ছকে মিয়ানমার মর্যাদা ঘোড়ার সমতুল্য অথবা নিদেনপক্ষে নৌকার তুল্য। ’ দাবার ছকের গুরুত্বপূর্ণ এ ঘুঁটিকে আঘাত করে চীনকে খেপাতে চাইছে না যুক্তরাষ্ট্র, এমনটা মনে করেন গ্রসম্যান। তাঁর অভিমত, ক্ষমতার দ্বন্দ্বে বিপরীতমুখী অবস্থানে থাকা চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মতানৈক্যের সুযোগটাই মিয়ানমার কাজে লাগাচ্ছে।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মৌলিক অধিকারবঞ্চিত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা বরাবরই সংখ্যাগরিষ্ঠদের নির্যাতনের শিকার। সেই সঙ্গে গত অক্টোবরে সন্ত্রাসী হামলায় পুলিশ নিহত হওয়ার পর সরকারি বাহিনীও তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা দূরে থাকা, এসব খবরকে বিশেষ মহলের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার অ্যাখ্যা দেন সু চি।-স্পুতনিক
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে