বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৯:৩৩:৪৫

ডোনাল্ড ট্রাম্প হামলা করবেনই!

  ডোনাল্ড ট্রাম্প হামলা করবেনই!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে ‘পুরোপুরি ধ্বংস’ করার যে হুমকি দিয়েছেন সম্ভবত তিনি পূরণ করবেন বলে এখন মনে হচ্ছে। আড়াই কোটি জনসংখ্যার দেশ উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন যদি যুক্তরাষ্ট্রের শহরগুলোতে হামলা করার মতো ÿেপণাস্ত্র তৈরি করতে পারেন তাহলে তার দেশের চেয়ে বহু গুণ বড় ও শক্তিশালী যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার দেশের পরমাণু যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়বে। একজন শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ এ কথা বলেছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরে ৩২ বছর ধরে কর্মরত সাবেক ক‚টনীতিক প্রফেসর জোসেফ ডি থমাস সতর্ক করে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এমন ‘মন¯Íাত্তি¡ক মহড়া’ দিচ্ছে যে তাদের বড় বড় শহরে আঘাত হানতে পারে উত্তর কোরিয়ার এমন একক পারমাণবিক হুমকির মধ্যে তাদের পÿে ‘একটি দিনও বসবাস করা সম্ভব নয়’।

উত্তর কোরিয়া সংশিøষ্ট বিষয় বিশেøষণকারী ওয়েবসাইট ‘থার্টিএইট নর্থ’-এ লেখা এক নিবন্ধে প্রফেসর ডি থমাস আরো বলেন, সম্প্রতি জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদে দেয়া ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে কথা বলেছেন ‘তাতে সম্ভবত দেশটির সাথে ক‚টনৈতিক সমাধানের সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে’। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের ভাষণ ও উত্তর কোরিয়ার প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-এশিয়া একটি বড় ধরনের যুদ্ধে লিপ্ত হতে যাচ্ছে।

পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির এ প্রফেসর লিখেছেন, হুমকি-পাল্টা হুমকির মাত্রা বৃদ্ধি ও ক‚টনৈতিক বিকল্পের ‘পথ বন্ধ হয়ে’ যাওয়ায় এখন আড়াই কোটি মানুষের দেশটিকে ধ্বংস করে দেয়ার প্রেসিডেন্টের হুমকি কাজে পরিণত করার সম্ভাবনা ‘আগের চেয়ে অনেক বেশি’ বা¯Íব বলে মনে হচ্ছে। নিজের বিশেøষণ থেকে প্রফেসর ডি থমাস লিখেছেন, ‘উভয় পÿের মহড়া দেখে মনে হচ্ছে, তারা মানসিকভাবে মনে করছে যে, অন্যপÿ কাক্সিত অবস্থান থেকে হটে না গেলে যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী।’

‘উত্তর কোরিয়া মনে করে, তারা যদি মার্কিন শহরগুলোতে আঘাত হানার সামর্থ্য অর্জন করে তাহলেই তাদের নিরাপত্তা অর্জন করা সম্ভব হবে। অন্য দিকে যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, উত্তর কোরিয়া যদি এ লÿ্য অর্জন করে তাহলে যুদ্ধ অনিবার্য।’

তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়া মার্কিন ভ‚খণ্ডে আঘাত হানতে সÿম অস্ত্র তৈরি করতে পারলে তাদের হুমকির মধ্যে মার্কিনিদের ‘একদিনও বসবাস করা সম্ভব নয়’, এমন উদ্বেগের কারণে ট্রাম্প প্রশাসন সম্ভবত একটি যুদ্ধ পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে। তিনি লিখেছেন, ‘প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তারা এরই মধ্যে যুদ্ধ এড়ানোর ব্যাপারে অনেক মন্তব্য করেছেন। তারা সম্ভাব্য শত্রæকে অশুভ শক্তি ও উন্মাদ আখ্যা দিয়ে যুদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের চিরচরিত মন¯Íাত্তি¡ক প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। তারা আভাস দিয়েছেন যে, এমন প্রকাশ্য অস্পষ্ট পরিস্থিতির মধ্যে তারা সামরিক পদÿেপ গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছেন।’

ডি থমাস বলেন, ‘অবরোধ যদি পিয়ংইয়ংকে নতজানু করতে না পারে এবং দেশটি যদি যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানার উপযোগী পারমাণবিক ÿেপণাস্ত্র মোতায়েন করে তাহলে দেশটির বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের অভ্যন্তরের ব্যক্তিরা সম্মত হয়েছেন বলে মনে হচ্ছে’। ‘উত্তর কোরিয়ার একটি পরমাণু অস্ত্র বড় বড় মার্কিন শহরে আঘাত হানতে সÿম এমন হুমকির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একদিনও বসবাস করতে পারবে না এমন ধারণা থেকে এই অঘোষিত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

দুই দেশের মধ্যে তীব্র বাগযুদ্ধ চলার মধ্যে কোরিয়া সঙ্কট অবসানে ‘সামরিক বিকল্প’ অবলম্বনে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত বলে উলেøখ করে ট্রাম্প বলেন, এর পরিণতি ‘উত্তর কোরিয়ার ধ্বংস ডেকে আনবে’। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানা রাজয়ের সাথে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় বিকল্পের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছি যদিও এটি আমাদের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিকল্প নয়। তবে আমরা যদি এ বিকল্প গ্রহণ করি তা হবে ধ্বংসাত্মক। আমি আপনাদের বলতে পারি তা উত্তর কোরিয়ার ধ্বংস ডেকে আনবে। সে বিকল্প হচ্ছে সামরিক ব্যবস্থা। আমরা যদি তা গ্রহণ করি, তাদের সে পথেই যেতে হবে।’

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়োং-হো সপ্তাহান্তে বলেন, ‘তাদের সম্প্রসারিত পারমাণবিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে মার্কিন মূল ভ‚খণ্ডে উত্তর কোরিয়ার রকেট হামলা অনিবার্য হয়ে পড়েছে।’ তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র হুমকি দান অব্যাহত রাখলে তারা বেশি দিন বাঁচতে পারবেন না বলে ট্রাম্প তার দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এ ছাড়া ট্রাম্প পরস্পরের প্রতি ধারাবাহিকভাবে অবমাননাকর উক্তি করেছেন। ট্রাম্প উনকে রকেটম্যান বলে বিদ্রƒপ করে বলে তিনি আত্মঘাতী মিশনে রয়েছেন। জবাবে উন তাকে বলেন উন্মাদ ও ভীতু কুকুর। ইন্ডিপেন্ডেন্ট অবলম্বনে
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে