আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ত্রাণ দেবে, তবে জাতিগত নিধনযজ্ঞের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবে না মালয়েশিয়া। শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সেদেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমদ জাহিদ হামিদি জানিয়ে দিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য কোনও সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের আগ্রহ মালয়েশিয়ার নেই।
কুয়ালালামপুরে জে ডব্লিউ ম্যারিয়ট হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে হামিদি এসব কথা বলেন বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে।
হামিদির দাবি, মালয়েশিয়া ১৯৫১ সালের রিফিউজি কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়, সেকারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার দায়িত্ব সেদেশের ওপর বর্তায় না।
১৯৫১ সালের রিফিউজি কনভেনশন হলো জাতিসংঘের অধীনে স্বাক্ষরিত একটি বহুপক্ষীয় চুক্তি। শরণার্থী কারা তা এ চুক্তিতে বর্ণনা করা হয়েছে এবং আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকার ও তাদেরকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রগুলোর দায়বোধকে সেখানে ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।
১৯৫১ সালে জাতিসংঘের শরণার্থী সংজ্ঞায় বলা হয়, একজন ব্যক্তি যদি গভীরভাবে উপলদ্ধি করেন ও দেখতে পান যে, তিনি জাতিগত সহিংসতা, ধর্মীয় উন্মাদনা, জাতীয়তাবোধ, রাজনৈতিক আদর্শ, সমাজবদ্ধ জনগোষ্ঠীর সদস্য হওয়ায় তাকে ঐ দেশের নাগরিকের অধিকার থেকে দূরে সরানো হচ্ছে; সেখানে ব্যাপক ভয়-ভীতিকর পরিবেশ বিদ্যমান এবং রাষ্ট্র তাকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে; তখনই তিনি শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত হন।
জাহিদ হামিদি বলেন, ‘শরণার্থীদের জন্য চুক্তিতে স্বাক্ষরের কোনও ইচ্ছে আমাদের নেই।’
তবে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং অন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর যে নীতিমালা রয়েছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মালয়েশিয়া সহযোগিতা দেবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অবশ্য, গত মাসে মালয়েশিয়ান মেরিটাইম এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি (এমএমইএ) এর মহাপরিচালক জুলফিকলি আবু বকর বলেছিলেন রোহিঙ্গাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেওয়া হবে।
আবু বকরকে উদ্ধৃত করে সেসময় ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছিল মালয়েশিয়ার কোস্ট গার্ড রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেবে না এবং সাময়িক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করবে।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস