আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ২০১৫ সালে পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন অমিতাভ। সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রথমে দার্জিলিঙে পোস্টিং পেয়েছিলেন।
কালীপুজোর ছুটিতে আগামী সোমবার বাড়িতে আসবেন বলে কথা দিয়েছিলেন অমিতাভ মালিক। কিন্তু মধ্যমগ্রামের শ্রীনগরের বাড়িতে দীপাবলির আগেই নেমে এল অন্ধকার। কারণ, বাড়ির বড় ছেলে অমিতাভ মালিক (২৬) বৃহস্পতিবার রাতে দার্জিলিঙে গুরুঙ্গবাহিনীর ছোড়া গুলিতে নিহত হয়েছেন।
২০১৫ সালে পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন অমিতাভ। সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রথমে দার্জিলিঙে পোস্টিং পেয়েছিলেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসেই বিয়ে করেছিলেন অমিতাভ। স্ত্রীকে নিয়ে দার্জিলিঙেই থাকতেন। মধ্যমগ্রামের বাড়িতে বাবা, মা এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ভাই রয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে দার্জিলিঙের পাতলেবাসের কাছে বিমল গুরুঙ্গকে গ্রেফতার করার অভিযানে গিয়ে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় অমিতাভর।
পরিবার সূত্রে খবর, বরাবরই মেধাবী ছাত্র ছিলেন অমিতাভ। ছোটবেলা থেকেই পুলিশের চাকরিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে ছিল। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সুযোগ পেয়েও অর্থনৈতিক কারণে পড়তে যেতে পারেননি। পরে পুলিশের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন অমিতাভ। রাজ্যের এডিজি আইনশৃঙ্খলা অনুজ শর্মার কথায়, অত্যন্ত সাহসী অফিসার ছিলেন তিনি। তরুণ এই অফিসারকে পুলিশবাহিনীর গর্ব বলে জানান তিনি। পুলিশের অভিযোগ, মাওবাদী এবং উত্তর-পূর্বের জঙ্গীদের সঙ্গে যোগ রয়েছে বিমল গুরুঙ্গের।
দার্জিলিঙে অশান্তি শুরু হওয়ার পর থেকেই বাড়িতে অমিতাভকে নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকতই। কিন্তু দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ভাই অরুণাভকে গণ্ডগোলের কথা সেভাবে জানাতেন না অমিতাভ। যাতে তাঁকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে গিয়ে ভাইয়ের পড়াশোনার ক্ষতি না হয়। এর আগে অবশ্য দার্জিলিঙে থানায় হামলার ঘটনায় আহত হন অমিতাভ। কলকাতায় এসে চিকিৎসাও করিয়ে গিয়েছিলেন।
দার্জিলিঙ শান্ত হয়ে আসায় কিছুটা নিশ্চিন্ত হয়েছিল পরিবার। বৃহস্পতিবারের অভিযানের কথা আগাম বাড়িতে জানানওনি অমিতাভ। কিন্তু শুক্রবার ভোরেই দুঃসংবাদটা আসে। খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাড়িতে পাড়া-প্রতিবেশীদের ভিড় দমকে থাকে। এলাকায় ভাল ছেলে হিসেবেই দারুণ জনপ্রিয় ছিলেন এই তরুণ অফিসার।
অমিতাভর ভাই অরুণাভ এই ঘটনার পরেও বায়ুসেনায় যোগ দিতে চায়। কিন্তু দাদার মৃত্যুর পরে বাবা-মা আর তাকে সেই অনুমতি দেবেন কি না, নিশ্চিত নয় দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র অরুণাভ।-এবেলা
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস