আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অধিকাংশ বাচ্চার কাছেই উৎসব মানে পড়াশোনা থেকে সাময়িক ছুটি। আনন্দের প্রহর। কিন্তু, তার কাছে স্কুল থেকে ছুটির অর্থ হয়ে উঠল, এই পৃথিবী থেকেই ছুটি। দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে ছুটি পড়েছিল স্কুলে।
ফলে, জুটছিল না মিড ডে মিলের খাবার। এদিকে পরিবারের রেশন কার্ডগুলি আধার নম্বরের সঙ্গে যোগ করা হয়নি। ফলে, রেশনের সস্তার চাল, গম, চিনি থেকেও বঞ্চিত ছিল তার পরিবার। অগত্যা অভুক্ত থাকা। এই পরিস্থিতিতে কয়েকদিন খাবার না জোটায় খালি পেটেই থাকতে হচ্ছিল।
কিন্তু, ১১ বছরের একটি মেয়ের পক্ষে কতটা আর সহ্য করা সম্ভব। শেষরক্ষা হয়নি। না খেতে পেয়ে মারাই গেল ভারতের ঝাড়খণ্ডের সিমডেগা জেলার প্রত্যন্ত কারটিমারি গ্রামের বাসিন্দা সন্তোষী কুমারী (১১)। যদিও চিকিৎসক বলছেন, “সন্তোষীর ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু হয়েছে।”
এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসারত সন্তোষীর মা কইলি দেবী বলেন, “মেয়েটা ভাত চাইতে চাইতে মরে গেল। চার-পাঁচদিন ধরে পরিবারের কেউই খাইনি।”
ভারতের জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনে সন্তোষীর পরিবারের সস্তায় চাল, গম এবং চিনি পাওয়ার কথা। কিন্তু জানা গেছে, সন্তোষীর পরিবারকে স্থানীয় ডিলার রেশন দিচ্ছিলেন না। কারণ, তাদের রেশন কার্ডগুলির সঙ্গে আধার নম্বর লিঙ্ক করা হয়নি।
ওই রেশন ডিলারের আওতায় ৭০০ পরিবার রয়েছে। তার মধ্যে রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বর না জোড়ায় ১০টি পরিবারের নাম তালিকা থেকে কেটে ফেলা হয়েছে। এই ঘটনায় তিনি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
সমাজকর্মী তারামণি শায়ের বক্তব্য, আধার নম্বর না দেওয়ায় কোনও পরিবারকে রেশনের সুযোগ না দেওয়া মানে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ লঙ্ঘন করা। কারণ, গরিব পরিবারগুলিকে সরকারের জনকল্যাণমুখী প্রকল্পগুলি, বিশেষ করে ভর্তুকির সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে আধার নম্বর বাধ্যতামূলক নয়।
ঝাড়খণ্ডের খাদ্যমন্ত্রী সরজু রাইও বলেন, আধার কার্ড না থাকা রেশন কার্ড বাতিল করা যাবে না। যদি কেউ এমনটা করে থাকেন, সেটা ভুল করেছেন। গত এপ্রিলেই তিনি আদেশ দিয়েছেন আধার নম্বর জোড়া নেই এমন রেশন কার্ড বাতিল করা যাবে না।
এমটিনিউজ/এসএস