১৩ মাসের শিশুকে বুকে জড়িয়ে ধরে বাঁচে এক বিমানযাত্রী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাখে আল্লাহ, মারে কে? পরম করুণাময়ের কি অশেষ রহমত, বিমান বিধ্বংসে প্রায় ৪০ জন যাত্রী মারা গেলেও বেঁচে রইল ১৩ মাস বয়সী কন্যাশিশু নালৌ ও উয়র অ্যারোপ নামের এক ব্যক্তি।
বুধবার সকালে হোয়াইট নীলনদের তীরে আছড়ে পড়েছিল সাউথ সুদানের পণ্যবাহী বিমান অ্যান্টোনোভ এএন-১২। ৫ রাশান ক্রুসহ সব যাত্রীর নিহতের খবর পাওয়া গেলেও ওই কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর বেঁচে যায় এ দুজন।
নালৌর কোনো পরিচিত বা আত্মীয় না হওয়া সত্ত্বেও বিমান বিধ্বস্তের সময় ১৩ মাসের নালৌকে বুকে আঁকড়ে ধরে রক্ষা করেন অ্যারোপ। হাসপাতালে চিকিৎসার পর শনিবার কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠে অ্যারোপ।
তিনি বলেন, প্লেন ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই প্লেন বিধ্বস্ত হতে যাচ্ছে- যাত্রীরা চিৎকার শুরু করলে আমার পাশে আমার বন্ধু ও ওই শিশুটি ছিল। আমি শিশুটিকে বুকে জড়িয়ে ধরি, যেন ও আঘাত না পায়।
অ্যারোপ বলেন, জুবায় তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে কাজে ফিরে যাওয়ার জন্য দানিশ শরণার্থী কাউন্সিলের সঙ্গে পালৌইচে যাচ্ছিলেন তিনি। দক্ষিণ সুদানে গৃহযুদ্ধ ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে পালৌইচে কোনো যাত্রীবাহী বিমানের ফ্লাইট ছিল না।
তাই পণ্যবাহী বিমানটিতে ওঠার জন্য এক দালালকে ৫শ সাউথ সুদানীস পাউন্ড দেন অ্যারোপসহ আরো অনেকেই। যদিও তাকে টিকিট দেয়নি, তবুও তিনিসহ ৮জনকে বিমানে সিট দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বাকিরা জায়গা পেয়েছিল বিমানের কার্গোতে।
তিনি জানান, জ্ঞান ফেরার পর প্রথমেই আমার বন্ধুর কথা মনে পড়ে যে, ওই সময় সে আমার নাম ধরে ডেকেছিল।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সাউথ সুদানের স্থানীয় টিভি চ্যানেলের তরুণী সাংবাদিক অ্যাকল ডেঙ্গ সর্বপ্রথম ঘটনাস্থলে দৌঁড়ে যান। সেখানে তিনি অ্যারোপকে অজ্ঞান অবস্থায় পান এবং অ্যারোপের বুকে ঘুমিয়েছিল নালৌ। অ্যাকলসহ অন্যরা তাদের হাসপাতালে নিয়ে যান।
অ্যাকল বলেন, সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় নালৌ ও অ্যারোপকে আমরা খুঁজে পেয়েছিলাম। তবে অ্যারোপের শরীরের ৬ জায়গায় ভেঙে গেছে ও মাথায় আঘাত পেয়েছেন। দুর্ঘটনায় নালৌও মাথায় আঘাত পেয়েছে। তার এক পা ভেঙে গেছে। কিন্তু দুর্ঘটনায় নালৌর মা ও বোন মারা গেছে বলে জানিয়েছেন নালৌর বাবা।
সাউথ সুদানের বিমান সংস্থা থেকে জানানো হয়েছে, পণ্যবাহী ওই বিমানটিতে মানুষ পরিবহনের অনুমতি ছিল না। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির ক্যাপ্টেন জানিয়েছিলেন, ১২ জন যাত্রী এবং ৬ জন বিমানকর্মী নিয়ে উড়েছিল পণ্যবাহী বিমানটি।
কিন্তু ওই ১৮ আরোহী ছাড়াও বিমানটিতে আরো অনেকেই ছিলেন বলে সন্দেহ রয়েছে। সম্ভবত অত্যধিক ভার সহ্য করতে না পেরেই ভেঙে পড়েছিল বিমানটি।
৮ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম
�