শুক্রবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৭, ০৯:২৯:৫৫

যেকোনো মুহূর্তে রাশিয়ার হামলা!

যেকোনো মুহূর্তে রাশিয়ার হামলা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২০১৪ সাল থেকেই রাশিয়াকে পরাস্ত করতে ন্যাটো তার পূবাঞ্চলীয় কমান্ডের কর্মকাে বিভিন্ন পরিবর্তন এনেছে। প্রধানত তাদের লক্ষ্য ছিল রাশিয়ার আচরণে পরিবর্তন আনতে বাধ্য করা; কিন্তু মস্কোর নীতি আসলেই পরিবর্তিত হচ্ছে কি না তা কিভাবে পরিমাপ করা সম্ভব? এ বিষয়েই সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের থিংক ট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান র‌্যান্ড করপোরেশন। রিপোর্টটি মূলত এ বিষয়ে মস্কোর কর্মকাে র বিশ্লেষণাত্মক কাঠামো।

র‌্যান্ড করপোরেশনের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘সব সামরিক অগ্রসরতা সত্ত্বেও রাশিয়ার সীমন্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে- বিশেষ করে বাল্টিক অঞ্চলে প্রচলিত ক্ষমতা বজায় রাখতে ভারসাম্যহীনতায় ভুগছে ন্যাটো। এই ভারসাম্যহীনতা দূর করার জন্য বিশ্লেষক ও নীতিনির্ধারকরা ওই অঞ্চলে ব্যয় বৃদ্ধি ও ন্যাটো সদস্য দেশগুলোর ওপর রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলার সফল হওয়ার ঝুঁকি দূর করার বিষয়ে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন।’

এসব প্রস্তাবের উদ্দেশ্য হচ্ছে ন্যাটো জোটের পক্ষে অনুকূল এমন পন্থায় রাশিয়ার আচরণে পরিবর্তন আনা। পাশাপাশি এই পদ্বতি প্রয়োগ করতে ন্যাটোকে সতর্ক হতে হবে যাবে বিষয়টি উসকানি হিসেবে কাজ না করে, যেমন মস্কোর সাথে কতটা দূরত্ব তৈরি হবে তাও ন্যাটোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। র‌্যান্ডের রিপোর্টে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো যে পদক্ষেপই নিতে চায় না কেন, তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে রাশিয়ার আচরণে পরিবর্তন আনা। তবে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে ন্যাটোকে অবশ্যই রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া বিবেচনায় রাখতে হবে’।

র‌্যান্ড করপোরেশনের রিপোর্টের ভাষ্যানুযায়ী, মার্কিন নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, ন্যাটোর পদক্ষেপের জবাবে রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া বিভিন্নভাবে হতে পারে। তারা হয়তো কিছুই করবে না, আবার হয়তো পাল্টা সামরিক পদক্ষেপও নিতে পারে।

কাজেই এ ক্ষেত্রে ক্রেমলিনের প্রতিক্রিয়া অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে পূর্বাঞ্চলে ন্যাটোর যে শক্তি রয়েছে তা রাশিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য যথেষ্ট বলে মনে করে র‌্যান্ড করপোরেশন। তারা রিপোর্টে বলেছেন, ‘আমাদের বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যেকোনো ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলা মোকাবেলার মত যথেষ্ট শক্তি রয়েছে জোটের।

র‌্যান্ড করপোরেশনের রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্্র ও ন্যাটো ইতোমধ্যেই বাল্টিক অঞ্চলে শক্তি বৃদ্ধির যে ঘোষণা ইতোমধ্যেই দিয়েছে তার বাস্তাবায়ন হয়তো রাশিয়ার দিক থেকে হামলার ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে, যদিও এই ঝুঁকি এমনিতেই কম। বর্তমান প্রচলিত যুদ্ধ আইনেই ন্যাটোর প্রতিরোধ ক্ষমতা যথেষ্ট শক্ত। এ ছাড়া বাল্টিক অঞ্চল কিংবা যেকোনো ন্যাটো সদস্য দেশের বিরুদ্ধে আক্রমণ হলে যুক্তরাষ্ট্রও তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে।’ তবে রাশিয়া হয়তো এটাও বুঝতে পারছে যে, এমন কোনো আগ্রাসী পদক্ষেপ যা ন্যাটো চুক্তির ৫ নম্বর ধারাকে উদ্বুদ্ধ করতে পারে, তা অবশ্যই ন্যাটো সদস্য দেশগুলোর সাথে তার সরাসরি সঙ্ঘাত ডেকে আনতে পারে। রিপোর্ট প্রস্তুতকারীরা মনে করছেন, রাশিয়ার এমন কোনো উদ্দেশ্য নেই, যা ন্যাটো সদস্য দেশগুলোর সাথে তাকে যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলবে।

রাশিয়া কী করতে পারে সে বিষয়ে রিপোর্টের ভাষ্য হলো, ‘রাশিয়া ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছে তার উদ্দেশ্য হচ্ছে পশ্চিম সীমান্তে ন্যাটোর বৃহৎ উপস্থিতির জবাবে অভ্যন্তরীণ বাহিনীর সমন্বয় করা। অতীতে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর হুমকি মোকাবেলায় রাশিয়া বহুমুখী পদ্ধতি প্রয়োগ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, বহুপক্ষীয় নিরাপত্তা চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করা, যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সেনা প্রেরণ এবং কলিনইনগ্রাদ-ভিত্তিক ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্রের হুমকি’।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে