আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তাজ মহল বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করলেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁর দাবি জয়পুরের রাজার জমি জোর করে ছিনিয়ে নিয়ে সেই জায়গায় তৈরি হয়েছে তাজ মহল। বিজেপি নেতার নতুন দাবি, তাজ মহল হয়ে উঠেছে বাবরি মসজিদ এর মতই।
এর আগে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের তৈরি তাজ মহল ‘ভারতীয় ইতিহাসে একটি কলঙ্ক’ বলে নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক সঙ্গীত সোম। তাতে ইন্ধন জুগিয়েছিলেন অন্য এক বিজেপি নেতা বিনয় কাটিয়ার। তাঁর দাবি শিব মন্দির ভেঙে সেখানে তাজ মহল তৈরি হয়েছে।
স্বামী অবশ্য শিব মন্দিরের দাবির পিছনে তেমন প্রমাণ পাননি। তবে তাঁর দাবি, ‘‘প্রমাণ রয়েছে যে, জয়পুরের রাজা-মহারাজাদের কাছ থেকে জোর করে শাহজাহান এই জমি নিয়েছিলেন। তিনি ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৪০টি গ্রাম রাজাদের দিয়েছিলেন। সেটা অবশ্য তাজমহলের জমির মূল্যের সঙ্গে তুলনার যোগ্য নয়।’’
শিব মন্দির নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘নথিতে দেখা যাচ্ছে সেখানে একটি শিব মন্দির ছিল। কিন্তু সেই মন্দির ভেঙে তাজমহল বানানো হয়েছে কি না, তা পরিষ্কার নয়।’’ তাজ মহল নিয়ে বিতর্ক মনে করিয়ে দিচ্ছে রাম জন্মভূমি বিতর্ক। বাবরের আমলে অযোধ্যায় রামের জন্মস্থানে মসজিদ তৈরি হয়েছিল বলে দাবি। তা নিয়ে কত কাণ্ডই না হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে সেই মসজিদ। রাম মন্দির নিয়ে মামলা গড়িয়েছে আদালতে।
ঠিক সেই ঢঙেই তাজ মহল বিতর্ক দানা বাঁধছে। প্রথমে তাজ মহলকে মুসলমান সম্রাটের আমলে তৈরি বলে তাঁর স্থাপত্য শিল্পকে অবজ্ঞা করা, সেখানে শিব মন্দির ছিল বলে তাজ মহলের নাম বদল করার দাবি এবং এবার নথি দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা শাহজাহান জোর করে জমি দখল করেছিলেন। ঠিক এই বিতর্কের সুর ধরেই সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খান আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, অযোধ্যার বাবরি মসজিদের মতো তাজ মহলও ধ্বংস হতে পারে।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তাজ মহলের গুরুত্ব বাড়াবার কথা বলে সঙ্গীত সোমের বক্তব্যকে লঘু করার চেষ্টা করেছেন ঠিকই। কিন্তু বিধায়কের মূল বক্তব্যকে খণ্ডন করেননি। বরং যোগী বলেছেন, ‘‘কে তাজ মহল বানিয়েছে তা বড় কথা নয়, এই সৌধ ভারতীয়দের ‘ঘাম-রক্ত’ দিয়ে তৈরি হয়েছিল।’’
এই বিতর্ক বাড়তে দিয়ে ইতিহাসের একটি নতুন আলেখ্য তৈরি করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। কোথায় গিয়ে তাজ-বিতর্ক থামবে, তাই এখন দেখার। --এবেলা
এমটিনিউজ২৪/এম.জে/এস