শুক্রবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৭, ০৮:৩০:১৮

‘এতটা নির্মম পুলিশ প্রশাসন? আমার তো এখন আত্মহত্যা করা উচিত’

‘এতটা নির্মম পুলিশ প্রশাসন? আমার তো এখন আত্মহত্যা করা উচিত’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সোশাল মিডিয়ায় বির্তকিত পোস্টে পুলিশকে তদন্তে অসহযোগিতা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। আর আজ দেবজিৎ রায় ও অনুপম তরফদার নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করলো কলকাতার বালুরঘাট থানার পুলিশ।

দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর আজ সন্ধ্যায় তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আগামীকাল তাদের আদালতে তোলা হবে। এদিকে, পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন অনুপমের স্ত্রী মধুছন্দা তরফদারও। পরে থানাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন দেবজিৎ। তাকে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এবার দুর্গাপুজোয় বালুরঘাট শহরের জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিকাল ৪টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত বালুরঘাট শহরে বাইক ও গাড়ি চলাচল সম্পূর্ণভাবে নিষেধ করা হয়েছিল। শুধুমাত্র টোটো এবং রিকশায় চেপে মন্দির ঘোরার অনুমতি দেওয়া হয়। টোটোর অনিয়ন্ত্রিত ভাড়া, অযথা হয়রানি সহ পুলিশ প্রশাসনের অনিয়ম তুলে ধরে সোশাল মিডিয়ায় একের পর এক পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশের বিরুদ্ধে করা পোস্টগুলো শেয়ার হয়ে ভাইরাল হয়ে যায়। এদিকে কয়েকজনের পোস্টে থাকা কয়েকটি শব্দ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। ইতিমধ্যে বিষয়টি নজরে আসে টোটো চালকদের। নির্ধারিত ভাড়া ও তাদের নিয়ে পোস্টটির বিরুদ্ধে গত ৪ অক্টোবর বিকালে বালুরঘাটের চকভৃগুতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান টোটো চালকরা।

তবে পুলিশের হস্তক্ষেপে মিনিট পনেরোর মধ্যে তা উঠে গিয়েছিল। কিন্তু, বিষয়টি নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন টোটো চালকরা। এদিকে সোশাল মিডিয়ায় করা প্রত্যেকটি পোস্টে পুলিশকেও নিশানা করা হয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে বালুরঘাট থানার পক্ষ থেকে সোশাল মিডিয়ায় ওই পোস্টকারী এবং তা যারা শেয়ার করেন তাদের চিহ্নিত করা হয়।

তাদের ফোন করে ও নোটিস পাঠিয়ে থানায় ডেকে পাঠানো হয়। থানায় জিজ্ঞাসাবাদও চলে। এদিকে পুলিশি হয়রানির অভিযোগে গতকাল বালুরঘাট পশু হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা, পেশায় ব্যবসায়ী দেবজিৎ রায় স্বপরিবারে স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণের জন্য জেলাশাসক সহ অন্য কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানান।

এরপর আজ দুপুরে দেবজিৎ ও পেশায় ব্যাঙ্ককর্মী অনুপম তরফদার (ঘোষপাড়ার বাসিন্দা)-কে ফের পুলিশ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। দুটো থেকে সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত চলে জিজ্ঞাসাবাদ। এরপর তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্তে অসহযোগিতা ও তথ্য গোপনের অভিযোগে ওই দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আগামীকাল তাদের আদালতে তোলা হবে।

দেবজিতের স্ত্রী প্রিয়দর্শিনী পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, ‘আমি জানতেও পারিনি ওকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুপুর থেকে থানায় এসে বসে আছি। পুলিশ বলছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু, পরে বড়বাবু আসার পর শুনলাম ওকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘কেন গ্রেপ্তার হয়েছে সেটাই তো বুঝতে পারছি না। হঠাৎ করে গ্রেপ্তার করা হল। ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হচ্ছে। তাছাড়া আমি গর্ভবতী। আমার কথাও ভাবা হল না। দেবজিতের শরীর খারাপ। ও ওষুধ পর্যন্ত খায়নি। এতটা নির্মম হতে পারে পুলিশ প্রশাসন? আমরা এই সমাজে বাস করি। ছি ! এখন তো মনে হচ্ছে আমার আত্মহত্যা করা উচিত।’

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে