সোমবার, ০৯ নভেম্বর, ২০১৫, ০৮:০০:৫৩

কুকুরের কারণেই ঘর ভাঙলো ইমরান-রেহামের!

কুকুরের কারণেই ঘর ভাঙলো ইমরান-রেহামের!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ও তেহরিক-ই-ইনসাফ-এর প্রধান ইমরান খান এবং বিবিসির প্রাক্তন সাংবাদিক রেহাম খানের বিচ্ছেদ নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে। কি কারণে হঠাৎ করেই তাদের বিচ্ছেন হয়ে গেল তা নিয়ে নানা প্রশ্ন। একেক সূত্র জানা যাচ্ছে একেক ধরণের কারণ। তবে একটি ব্রিটিশ পত্রিকার দাবি, ইমরান খানের পোষা কুকুর নিয়ে মতানৈক্যের কারণে তাদের বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়েছে। এছাড়া রেহাম খানের আগের পক্ষের সন্তানদের বেশি গুরুত্ব ও পরিবারের ওপর কর্তৃত্ব খাটানোর মানসিকতাও বিচ্ছেদের বড় কারণ। পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খান ও রেহাম দু’জনই আকষ্মিক বিবাহ-বিচ্ছেদের পর রেহাম এক ট্যুইট করে বলেন, ‘আমি এবং ইমরান আলাদা রাস্তায় হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দুই পক্ষের সম্মতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে।’ কিন্তু ব্রিটশ ওই পত্রিকাটি দাবি করলো, আকষ্মিকভাবেই রেহামকে তালাক দেন ইমরান। পত্রিকাটি জানিয়েছে, প্রথমে মোবাইলে তিনবার ‘তালাক’ শব্দ লিখে রেহামকে ম্যাসেজ করেন ইমরান খান। পরে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত ই-মেইল করেন তিনি। রেহাম তখন বিমানে ছিলেন। ইংল্যান্ডের বার্মিংহ্যামে যাচ্ছিলেন। বার্মিংহ্যামে নেমেই তিনি সেই বার্তা পান। ব্রিটিশ পত্রিকাটির দাবি, ওই বার্তা পেয়ে স্তম্ভিত হয়ে পড়েন রেহাম। কিন্তু বিচ্ছেদের কারণ কি? এই প্রশ্নের জবাবে কিছু বলতে চান নি তেহরিক-ই-ইনসাফ-এর মুখপাত্র নইমুল হক। ইমরানের ঘনিষ্ঠ মহল জানিয়েছে, রেহামের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়াকে মেনে নিতে পারেননি ইমরান। বিয়ের পর থেকেই তেহরিক-ই-ইনসাফ-এর কাজে নাক গলাতে শুরু করেন রেহাম। তাই নিয়েই শুরু হয় মিঁয়া-বিবির ঝগড়া। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘোষণার আগে থেকেই দু’জনে আলাদা থাকতে শুরু করেছিলেন। সূত্রের খবর, রেহামকে দলীয় বিষয়ে মাথা ঘামাতে দিতে রাজি নন তেহরিক-ই-ইনসাফ-এর বেশ কিছু শীর্ষ নেতাও। সম্প্রতি উপ-নির্বাচনে হারের জন্য রেহামকেই দায়ী করেছে দলের একাংশ। কিন্তু তারা ইমরানের প্রাক্তন স্ত্রী জেমাইমাকে দলে মেনে নিয়েছেন। জেমাইমা আবার তার দুই ছেলের জন্য ইমরান খানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন। যা পসন্দ করতেন না রেহাম। এ দিন ইমরান-রেহামের বিচ্ছেদের খবর পাওয়ার পরেই জেমাইমা খানও ট্যুইট করেছেন, ‘আমি আবার ওর (ইমরান খান) প্রেমে পড়ছি।’ রেহামেরও এটি দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম থেকেই ইমরানের পরিবার এই বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। সূত্রের খবর, বিশেষ করে ইমরানের বোন রেহামকে আদপেই পছন্দ করতেন না। ফলে সব মিলিয়ে ১০ মাসের বেশি টিকল না এই বিয়ে। রেহাম খান-ইমরান খানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-ইনসাফের কয়েকজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে সেখানে যোগাযোগ করেন। সেখানেই ইমরানের ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু রেহামের খোরপোশের ব্যাপারটি সামাধান করেন। ইমরানের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, বিয়ের পরেই পাহাড়ের ওপর অবস্থিত ইমরানের বাড়ির নিয়ন্ত্রণ চলে যায় রেহামের হাতে। তাকে নাকি ইমরান বলেছিলেন, ‘বাড়িতে কোনও নিয়ম-শৃঙ্খলা নেই।’ বিয়ের পর প্রথমেই ইমরানের পোষা কুকুরগুলোকে উপেক্ষা করতে থাকেন রেহাম। ইমরান কুকুরগুলো আগে নিজের ঘরেই রাখতেন। কিন্তু রেহাম শোবার ঘরে কুকুরগুলোকে ঢুকতে দিতেন না। এমন কি দিনের বেলায়ও রুমে কুকুর ঢুকতে দিতেন না। কুকুরগুলোকে আলাদা ঘরে রাখার ব্যবস্থা করেন রেহাম। ইমরান বার কয়েক তাকে কুকুরগুলোকে নিজেদের ঘরে রাখার অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। এছাড়া রেহামের আগের পক্ষের তিন সন্তানের জন্য বাড়ির অনেক ব্যবস্থা পাল্টে ফেলতে হয়। রেহামের পরিবরের সদস্যরা ওই বাড়িতে ইচ্ছা মতো আসতেন-যেতেন। এছাড়া ইমরানের আত্মীয়দের সঙ্গে রেহামের বিরুপ সম্পর্কও বিবাহ-বিচ্ছেদের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে। এই বিচ্ছেদের পরে রাজনীতিতে আরও বেশি করে মন দিতে চান বলে জানিয়েছেন ইমরান খান। উল্লেখ্য : ১৯৯৫ সালে প্রথমবার বিয়ে করেন ইমরান খান। ব্রিটিশ সাংবাদিক, কোটিপতি জেমাইমা গোল্ডস্মিথকে। সেই বিয়ে টিকেছিল ৯ বছর। তবে তাদের বিচ্ছেদ হয় ২০০৪-এর জুনে। সে ঘরে তাদের দুইটি ছেলে রয়েছে। ২০১৫-র জানুয়ারিতে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ প্রধান ইমরান বিয়ে করেন বিবিসির প্রাক্তন সাংবাদিক রেহামকে। ইমরানের বয়স তখন ৬২ বছর এবং রেহামের বয়স ৪২। কিন্তু দ্বিতীয় বারের এ বিয়ে টিকেনি এক বছরও। ৯ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে