নিউজ ডেস্ক : রোহিঙ্গা ইস্যুতে একের পর এক দুঃসংবাদ আসছে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির জন্য। মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য তার আপোষহীন লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সম্মান অর্জন করেছিলেন, একে একে তা কেড়ে নেয়া হচ্ছে।
কেড়ে নেয়া হয়েছে তাকে দেয়া সম্মানসুচক অক্সফোর্ড সিটি অব ফ্রিডম পদক। সর্বশেষ একই রকম ঘোষণা দিয়েছে গ্লাসগো সিটি কাউন্সিল। তারা ২০০৯ সালে গৃহবন্দি থাকা অং সান সুচিকে ফ্রিডম অব গ্লাসগো পদকে ভূষিত করে। কিন্তু তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে একেবারে নিষ্ক্রিয় থাকায় তা কেড়ে নিয়েছে গ্লাসগো সিটি কাউন্সিল।
এটাই যে শেষ, তা কিন্তু নয়। সুচিকে ১৯৯১ সালে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের ছাত্র ইউনিয়ন সম্মানসূচক প্রেসিডেন্সি পদক দিয়েছিল। সেই পদকও কেড়ে নেয়া হতে পারে। এ বিষয়ে আগামী ৯ই নভেম্বর ভোটাভুটি হবে। পক্ষে ভোট পড়লেই সুচিকে হারাতে হবে এ পদকও।
এ খবর দিয়েছে ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআই ও লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। এতে বলা হয়, গ্লাসগো’র লর্ড প্রোভোস্ট ইভা বোলান্ডার বলেছেন, সম্প্রতি অং সান সুচির প্রতি আমি ও লিডার, কাউন্সিলর সুসান আইতকেন চিঠি লিখেছি। তার দেশে তার চোখের সামনে মানবাধিকারের বিরুদ্ধে যে নৃশংসতা ঘটছে তাতে আমরা আমাদের শহরের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানিয়েছি।
পরিস্থিতিতে তাকে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু আমরা যে জবাব পেয়েছি তা হতাশাজনক ও দুঃখজনক। স্কটিশ কাউন্সিল বলেছেন, এভাবে কোনো সম্মাননা প্রত্যাহার করা অপ্রত্যাশিত এবং তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা হালকাভাবে নেয়া হয় নি।
উল্লেখ্য, গ্লাসগো সিটি কাউন্সিলের এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে একই রকম সিদ্ধান্ত নেয় শেফিল্ড সিটি। এ সপ্তাহের শুরুর দিকে তারা সুচিকে দেয়া সম্মাননা ফ্রিডম অব শেফিল্ড কেড়ে নেয়। তারা এ বিষয়ে বলেছে, রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়টি ইচ্ছাকৃতভাবে অবজ্ঞা করছেন সুচি।
শেফিল্ড কাউন্সিলের কাউন্সিলর সুরাইয়া সিদ্দিকী বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগণের বিরুদ্ধে চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় বৃটেনের অনেক শহর সুচিকে দেয়া ফ্রিডম অব দ্য সিটি পদক বাতিল করেছে। আমার এমন প্রস্তাবের পক্ষে সব দল থেকে সমর্থন পেয়েছি। এতে আমি অভিভুত।
ওদিকে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস (এলএসই) সুচির বিরুদ্ধে প্রথম পদক্ষেপ নিচ্ছে সেখানকার ছাত্র ইউনিয়ন সুচিকে দেয়া সম্মাননা প্রত্যাহার প্রস্তাবে আগামী সপ্তাহে ৯ই নভেম্বর বিতর্কে অংশ নেবে। হবে ভোটাভুটি। এই ছাত্র ইউনিয়নের এক মুখপাত্র বলেন, যেকোনো কিছুর মূল্যে সুচি ক্ষমতায় থাকাকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
এর বিনিময়ে তিনি জাতি নিধন করতেও কুণ্ঠিত নন। মিয়ানমারে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যে গণহত্যা চলছে, আমরা তার নিন্দা জানাই। আমরা সব রকম ইসলামবিরোধিতার নিন্দা জানাই। যেসব ব্যবস্থা সহিংসতাকে সমর্থন করবে আমরাতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেবো।
এমটিনিউজ/এসএস