মাকে ভোট দেননি ছেলে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের বিহার নির্বাচনে মোদির দল বিজেপি’র পরাজয় নিয়ে এরই মধ্যে নানা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। এই নির্বাচনে কেরলা রাজ্যের থামারাকুলাম আসনের প্রার্থী ছিলেন পুলিশ কনস্টেবল রাজেশ কুমারের মা জগদাম্মা। কিন্তু তার মা বিজেপির প্রার্থী হওয়ায় তিনি মাকে পর্যন্ত ভোট দেননি। অবশেষে তার মা সেই আসন থেকে জয়ী হতে পারেন নি।
নিজের মাকে ভোট না দেয়ার কারণ উল্লেখ করেই তিনি মালায়াম ভাষায় ফেসবুকে ওই চিঠি পোস্ট করেন। এটি পরে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম ‘দা নিউজ মিনিট’ ইংরেজিতে অনুবাদ করে প্রকাশ করে। চিঠিতে তিনি লিখেছেন,‘আমি গর্বিত যে মায়ের ভালোবাসা আমাকে আমার দেশাত্মবোধ থেকে বিচ্যূত করতে পারেনি। যদিও নির্বাচনে আমার মায়ের পরাজয় ছেলে হিসেবে আমাকে খুব কষ্ট দিয়েছি। কিন্তু আমি আমার দেশের ১২৬ কোটি মানুষের কল্যানের কথা ভেবেই তাকে ভোট দিতে পারিনি।’
রাজেশ তার চিঠিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং জাতিগত বৈষম্যসহ নানা উপষঙ্গ তুলে ধরেছেন। তার অভিযোগ, মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থকাকালে নানাভাবে জাতিগত এবং ধর্মীয় বৈষম্যকে সৃষ্টি করেছেন। তার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ্য করেন, মােদির ১৫ বছরের শাসন আমলে ভারতের ২৯টি রাজ্যের মধ্যে গুজরাটের অবস্থান ছিল ২৮তম। এই রাজ্যের পয়ঃনিষ্কাষণ ব্যবস্থাও ছিল একেবারে খারাপ। এখানকার সিংহ ভাগ মানুষই প্রকাশ্যে মলত্যাগ করে।
বিজেপি’র অঙ্গ সংগঠন রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘের প্রধান মোহন ভগবতের করা এক সাম্প্রদায়িক উক্তি নিয়েও রাজেশ কুমারের ক্ষোভ ছিল। মোহন ভগবত উচ্চবর্নের হিন্দুদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘শীঘ্রই কোটা সংরক্ষণ ব্যবস্থা ফিরে আসছে এবং পুরনো দাসরা আবার ফিরে আসবে।’ একই সময়ে মোদিও নিম্নবর্ণের হিন্দুদের কোটা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
চিঠির শেষে ওই পুলিশ কনস্টেবল লিখেছেন,‘আমরা আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য একটি আধুনিক ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে চলেছি, যে সমাজ হবে গণতান্ত্রিক, ধর্ম নিরপেক্ষ এবং ধর্মীয় চরমপন্থা বিবর্জিত।’ ভারতে এ ধরনের উন্নত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাজেশের মত মানুষদের আরো অনেক আত্মত্যাগ করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।
১০ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�