আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ঠিক যেন কোনও গোয়েন্দা কাহিনি। এমন রহস্যময় সব ঘটনাই তো গল্পের পাতায় ঠাঁই পায়। কিন্তু কলকাতার বেহালার পাঠকপাড়ার বাসিন্দা রত্না সাহার সঙ্গে যা ঘটেছে, তা কোনও গল্পকথা নয়। একেবারে খাঁটি বাস্তব। আপাতত কুড়িয়ে পাওয়া ফোন নিয়ে জেরবার বেহালার সাহা পরিবার। দ্বারস্থ হয়েছেন পুলিশের।
গত ১০ নভেম্বর, ভাইয়ের সঙ্গে রত্না দেবী বেড়াতে গিয়েছিলেন সিঙ্গাপুরে। ১২ নভেম্বর সেখানকার ৪ডি সান্টোস প্রেক্ষাগৃহে গিয়েছিলেন ছবি দেখতে। ওই প্রেক্ষাগৃহেই তিনি কুড়িয়ে পান একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন। ফোনটিকে সঙ্গে রেখে দেন তিনি। অন করেই। যাতে যার ফোন তিনি ফোন করলেই তাঁকে ফিরিয়ে দিতে পারেন।
ফোনের মালিক কিন্তু কোনও ফোন করেননি। এরপর তিনি ফ্লাইট ধরে চলে যান মালয়েশিয়া। কিন্তু কোনও ব্যক্তিই ফোন করেননি। প্রথম ৩-৪ দিন ব্যাপারটা খেয়াল থাকলেও আস্তে আস্তে বেড়ানোর ব্যস্ততায় ফোনের ব্যাপারটা একরকম ভুলেই যান রত্না দেবী।
বুধবার কলকাতায় ফেরেন তিনি। এর আগে নয়াদিল্লিতে ফিরে তিনি নিজের ভাইপোকে দেখান ফোনটি। এর পর বাড়ি ফিরে ছেলে অভিমন্যুকে সেই ফোন দেখিয়ে সব কথা বলেন তিনি। ততদিনে স্বাভাবিক ভাবেই ফোনটি চার্জের অভাবে অফ হয়ে গিয়েছে।
অভিমন্যু ফোনটি আবার চালু করেন। দেখেন সেই ফোনে রয়েছে অসংখ্য উর্দু এসএমএস। আর তার পরই তার চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। তিনি দেখেন ওই ফোনে রয়েছে ব্যাঙ্কের এমন সব এসএমএস, যেখানে ৭০, ৮০ লাখ এমনকী ১ কোটি টাকারও লেনদেনের খবর হয়েছে!
সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে অক্টোবরের গোড়ার দিকের সময়ের মধ্যেই হয়েছে লেনদেনগুলি। এমন সব মেসেজ দেখে অভিমন্যু ভয় পেয়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান থানায়। কিন্তু স্থানীয় পর্ণশ্রী থানা কোনও জেনারেল ডায়রি নিতে অস্বীকার করে। কেননা, ফোনটি কুড়িয়ে পাওয়া গিয়েছিল সিঙ্গাপুরে।
আপাতত অভিমন্যু যাচ্ছেন এনআইএ (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি)-র কাছে। তিনি জানিয়েছেন, তাঁদের পুরো পরিবারই বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছে। এই বিরাট অঙ্কের লেনদেনের পিছনে কোনও রহস্য আছে কি না, সে কথা ভেবেই চিন্তিত তারা। কুড়িয়ে পাওয়া রহস্যময় ফোনের জন্য তারা কোনও বিপদে পড়বেন কি না সেটা ভেবেই আপাতত আতঙ্কিত সাহা পরিবার। -এবেলা
এমটিনিউজ/এসএস