সোমবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৭, ০৩:৫৩:১৪

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির, হিন্দু কনের বিয়ে দিল মুসলিমরা

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির, হিন্দু কনের বিয়ে দিল মুসলিমরা

আন্তর্জাতিক  ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহের চাঁচলের খানপাড়া গ্রাম। গোটা গ্রামে মাত্র ৮টি হিন্দু পরিবার রয়েছে, আর বাকি ৬০০টি মুসলিম পরিবার।
এই গ্রামেরই এক প্রয়াত দিন মজুরের মেয়ের বিয়ের জন্য টাকা জোগাড় করতে গিয়ে হন্যে হয়ে ঘুরছিল মেয়েটির পরিবার।

ঘরে রোজগারের লোক নেই। তাতেও আবার ৫ মেয়ে। সরস্বতীর বিয়ের জন্য যখন প্রবল আর্থিক সংকটে পরিবার, তখনই এই বিয়েতে আর্থিক সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন গ্রামের মুসলিমরা। গ্রামের মাদ্রাসার হেডমাস্টার মতিউর রহমানের উদ্যোগে গ্রামের সকল মুসলিমরা জোট বেঁধে এই কাজে এগিয়ে এসেছেন।

সরস্বতীর বিয়ের পণের জন্য ২০০০ টাকাই মাত্র যোগাড় করতে পেরেছে তার পরিবার। বিয়ের বাকি টাকা যোগাড়ে উঠে পড়ে লাগেন গ্রামের মুসলিমরা। সরস্বতীর মা শোভারানির পাশে দাঁড়ান তাঁরা। গ্রামের মেয়ে সরস্বতীর বিয়েতে, তাঁর অভিভাবকের ভূমিকায় আজ জালালউদ্দিন, ইমাদুল ইসলাম ও শাহিদুলরা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির, হিন্দু কনের বিয়ে দিল মুসলিমরা।

ইমাদুল জানিয়েছেন, ‘শোভারানির সমস্যার কথা জানতে পেরে আমরা সবাই এগিয়ে আসি। কারণ সরস্বতী আমাদের মেয়ে। ধর্ম আলাদা হতে পারে, তবে ওর বিয়ে আয়োজন করা আমাদের কর্তব্য। ’ আর ধর্মীয় ভেদকে দূরে সরিয়ে গ্রামের এই একাত্মতায় গত ২৫ ডিসেম্বর ভালোভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে সরস্বতীর।

ইমাদুল ইসলাম জানিয়েছেন, সরস্বতীর বাবা বেঁচে থাকলে যা করত, তার অনুপস্থিতিতে তাইই করার চেষ্টা করেছেন তাঁরা। সাম্প্রদায়িকতা যখন ভারতের বিভিন্ন অংশকে গ্রাস করছে, তখন এইরকম একটা উদাহরণ ভারতের এই রাজ্যের তথা এদেশের সংহতির আরেকটি দিককে তুলে ধরেছে।

এ ধরনের ঘটনা ভারতে এটাই প্রথম নয়, এর আগে মালদহের মানিকচক, ইংরেজবাজারে একই ছবি দেখেছিল গোটা ভারত। কীভাবে মানিকচকের শেখপুরে এক হিন্দুর সৎকারের সময়ে অর্থ সামর্থে আগিয়ে এসেছিলেন মুসলিমরা সে খবর জেনেছে গোটা ভারত। এরপর ইংরেজবাজারেও একইভাবে এগিয়ে আসতে দেখা যায়, সেখানকার স্থানীয় মুসলিমদের। এই সংহতির ছবির কাছে সত্যিই কোথাও হেরে যেতে বাধ্য সাম্প্রদায়িকতার হিংসা, সংহতির এই গর্বের কাছে অনেক অনেক ছোট হয়ে যায় সাম্প্রদায়িক হানাহানির চিন্তাভাবনা।

এমটিনিউজ২৪/এম.জে/এস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে