ফ্রান্সে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ১৪০, জরুরি অবস্থা জারি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে একাধিক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ১৪০ জন নিহত হয়েছে। এরমধ্যে একটি কনসার্টে হামলা ও জিম্মির ঘটনায় ১১০ জন মারা গেছে।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম দেশটিতে জরুরি অবস্থা করেছেন প্রেসিডেন্ট ফাঁসোয়া ওঁলাদ। দেশটির সব সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
দেশের সাধারণ নাগরিকদের ঘরে অবস্থান করার জন্য বলেছে দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং বাড়তি নিরাপত্তার জন্য নগরজুড়ে ১,৫০০ সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
ফ্রান্স পুলিশ জানিয়েছে, বাতাক্লান কনসার্ট হলে ১৫ জনকে হত্যা এবং ৬০ থেকে ১০০ জনের মতো লোককে জিম্মি করে অস্ত্রধারীরা। আমেরিকার একটি ব্যান্ড দলের কনসার্ট চলছিল তখন।
হত্যা ও জিম্মির ঘটনার পর পুলিশ কনসার্ট হলের চারপাশ ঘিরে রাখে। পরবর্তীতে পুলিশ জিম্মিদের উদ্ধারে ভারী অস্ত্রসহকারে সন্ত্রাসীদের ওপর আক্রমণ চালায়। এতে ৩ অস্ত্রধারী মারা পড়ে এবং শুক্রবার মধ্য রাতে পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রনে নিতে সক্ষম হয় পুলিশ। এ ঘটনায় ৮০ জনের মতো লোক মারা গেছে।
প্যারিস থেকে জন লরেন্সন নামের একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক আলজাজিরাকে জানিয়েছেন, কনসার্ট হলে বিপুল হত্যাযজ্ঞের ঘটনা ঘটেছে। ফলে প্রথমদিকে মৃতের যে সংখ্যা ঘোষণা করা হয়েছিল তারচেয়ে অনেক বেশি লোক এতে মারা গেছে।
ফ্রান্স পুলিশ প্রথমে ১৮ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছিল। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলছে।
শুক্রবার রাতে কনসার্ট ছাড়াও দুটি রেস্তোরার পাশে ও স্টেডিয়াম এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।
মধ্য প্যারিসে অবস্থিত একটি রেস্টুরেন্টে একজন বন্দুকধারী গুলি চালিয়ে ১১ জনকে এবং প্যারিসের স্ট্যাড ডি ফ্রান্স স্টেডিয়ামের পাশে বোমা বিস্ফোরণের ৩ জন নিহত হয়েছে। তবে কেউ কেউ বোমা বিস্ফোরণকে আত্মঘাতী হামলা বলে বর্ণনা করেছেন।
বোমা হামলার সময় স্টেডিয়ামে জার্মান ও ফ্রান্সের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফাঁসোয়া ওঁলাদ ওই ম্যাচ উপভোগ করছিলেন।
এদিকে ফ্রান্সে একাধিক হামলার ঘটনায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাকা ওবামা নিন্দা জানিয়ে সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি এ লড়াইয়ে ফ্রান্সের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।
এছাড়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, জার্মানির চ্যাণ্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল শোক ও নিন্দা জানিয়েছেন।
সূত্র : আলজাজিরা, বিবিসি, সিএনএন
১৪ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ